শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন

নারী চায় বৈধব্য জীবন!

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৭ Time View

লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।

নারী জীবনের কোন একসময় পৌঁছে, স্বামী নামক জীব টাকে বোঝা মনে করে! একজন দার্শনিক এমনটাই যুক্ত দিয়েছেন! নারী নিজেই একদিন সঙ্গীর মৃত্যু চায়, একা হতে চায়, গাড়ী বাড়ী সন্তান সমাজ নিয়ে একা দাপটের সাথে বাস করতে চায়!
স্বামী নামক সঙ্গীটা তখন তার কাছে সিন্দাবাদের দৈত্য বলে মনে হয়! ঘাড় থেকে নামায় ফেলতে চায় এই বোঝা, এমন টা-ই তিনি দেখিয়েছেন চোখে আঙুল দিয়ে, আজকে তা নিয়ে আমার দর্শন যোগ করে কিছু বলবো!

প্রিয় পাঠক, মানুষের ভিতর পুরুষ দারুন ভাবে ভাগ্যাহত! তাকে শুরুর জীবনে বাবা-মার সংসার টানতে হয়, পিতৃহীন হলে ভাইবোন মানুষ করতে হয়, তারপর নিজের সংসার হলে তা সামলাতে হয়, সন্তানদের মানুষ করতে করতে অবসর জীবন দরজায় করা নাড়ে। আমি দায়িত্ব সম্পন্ন মানবতা মনুষ্যত্ব আছে এমন পুরুষ মানুষের কথা বললাম। মানবতা মনুষ্যত্বহীন ব্যতিক্রমি মানুষ নিয়ে আমার এ লেখা নয়! নিজ জীবনের আসেপাশে দেখেছি, একজন ভাই একটু হাত বাড়ালে একজন বোন বা ভাইর জীবন টা দারুন উজ্জ্বল হতে পারতো। তেমনটা সে ভাই করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন নাই! একজন পুরুষ স্ত্রীর বংশগত বা পরিবার গত খাছলাত ছাড়তে না পারায় ঐ পুরুষ ২/৩ টা বিয়ে করে ফেলেছে, কোন একজন ভাই চেষ্টা করলে ঐ বোনের সংসার টা না-ও ভাঙতে পারতো, মায়ের দিকে একটু নজর দিলে তিনি আরো পাচ বছর বেশী বাচতেন, সামর্থ্য আছে বৃদ্ধ মা কে একটা ডিজিটাল প্রেসার মেশিন বা একটা ডায়াবেটিস মেশিন বা একটা ওজন মাপা মেশি কিনে দিলে তিনি আরও কিছুদিন বেশি বাঁচতেন, কিন্তু তা করেন নাই, আমার এ লেখা ঐসব আত্মকেন্দ্রিক পুরুষদের নিয়ে নয়!

পুরুষ মানুষ বাইরে খাটতে খাটতে স্ত্রী সন্তান মা-বাবার সুখ কিনতে কিনতে একসময় বার্ধক্যে পৌঁছে যায়! সন্তানরা বড় হয়, তারা বাবাকে খুব কম সময় কাছে পায়, ধনী গরীব ভালো চাকুরে, ব্যবসায়ী শ্রমিক সব শ্রেনীর পুরুষ গুলোর ব্যস্ততা প্রথম জীবনে কল্পনাতীত থাকে। বাংলাদেশ ছাড়া অনেক দেশের বেশীর ভাগ পুরুষ বাস ট্রাম মেট্রোরেল ট্রেন চড়ে দুই তিনশো কিলোমিটার দূরে অফিস করে, সন্তান মার হাতে মানুষ হয়, তার সান্নিধ্য পায়, হাতে তুলে খাওয়ানো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পৌছানো পর্যন্ত মাকে দেখে, আপনা থেকে মায়ের প্রতি আলাদা একটা সহানুভূতি (Sympathise) সৃষ্টি হয়, বাবার দূরত্ব বেড়ে যায়! ভালো মায়েরা সন্তানকে বাবার শ্রম ও কষ্টার্জিত অর্থেই সব হচ্ছে তেমনটা বুঝায়, সব মায়েরা সমান হয় না!

পাঠক, বাবা কর্মজীবনের অবসর নিয়ে যখন ঘরে এসে বসেন তখন তার চোখে দীর্ঘ দিনের অনেক অনিয়ম ধরা পড়ে! সে সব পরিবারের সদস্যদের তুলে ধরলে রোজ মনোমালিন্য বাড়ে!
অন্য দিকে নারী-পুরুষের ভালো বাসার কিছু ঘাটতি বয়সের জন্য উপস্থিত হয়। মেডিকেল বিজ্ঞান বলে প্রায় আশি শতাংশ নারী ৪৫/৫০ বছর বয়সের পরে শারিরীক যৌন চাহিদা কমে ক্রমান্বয়ে। বিশেষ করে নারীর পিরিয়ড বন্ধ হলে অধিকাংশ নারী তার চাহিদার ঘাটতি অনুভব করে, পুরুষের প্রতি আকর্ষণ আগের মত থাকে না, প্রায় ১০% নারী বিপরীত মুখী হয়, বিজ্ঞান এমন ধারনা দেয়! অন্য দিকে পুরুষের চাহিদা আর-ও অনেক বছর জীবিত থাকে। নারী-পুরুষের ভালো বাসার মনের চাহিদার সাথে শারিরীক চাহিদার মিশ্রন তা বিজ্ঞান অস্বীকার করে না। একটা চাহিদার ঘাটতিতে অবহেলা বেড়ে যায়! অকর্মণ্য পুরুষ টা একসময় সন্তানের কাছে বোঝা মনে হয়, কিছু গোপন বিষয় নিয়ে মা-বাবা ছোটখাটো ঝগড়াঝাটি মনোমালিন্য ও বাবার উপর সন্তান অসন্তোষ বাড়ে, নারী ও তখন অহেতুক dominated হতে চায় না, কাজের মেয়েও তখন চা নাস্তা সবার শেষে পুরুষ টার কাছে পৌছানো শুরু করে। সমাজে ও পুরুষ টা সহকর্মী বা বন্ধুবান্ধবহীন হয়ে যায়, বাসায় রুম বদ্ধ হয়ে যায় জীবন, আবদার অধিকার সবই স্ত্রীর কাছে, স্ত্রী তখন সময় দিতে আগের মত ততপর থাকে না, দূরত্ব সৃষ্টি হয় আকাশ-পাতাল, ভিন্ন হয় রাত্রি যাপনের কক্ষ, একই ছাদের নিচে বাস কিন্তু দু’জন ভিন্ন গ্রহের মানুষ। টুকিটাকি ভিন্নমতের উচ্চবাচ্য হতেই থাকে!
নারীরা খুব দ্রুত ভুলে যায় বিগত সুখের দিনগুলো, কত ঘাম ঝরানো বাড়ী গাড়ী সন্তান এই জায়গায় দাঁড়ানো! কোন কাজে লাগছে না অথচ সমাজে পরিচয় দিতে হয়, বা বলতে হয়, অসুস্থ তাই অনুষ্ঠানে আসতে পারে নাই এবং ক্রমশ, অহেতুক খরচের লোকটার মৃত্যু কামনা করে!

ব্যক্তি জীবনের উদাহরণ দিয়ে শেষ করবো। আমার বেশ কয়েকজন অফিস কলিগ, কবি সাহিত্যিক বন্ধু এমন কঠিন জীবন একাকিত্ব কাটাচ্ছেন। একজন বাসায় খেতে না পেয়ে হোটেলে প্রায়ই খেতে হয় অথচ মেয়ে প্রকৌশলী ছেলে ক্যাডার সার্ভিসের বড় অফিসার!
একজন আপনজনের মৃত্যু সংবাদ শুনে পরিবার সহ ছুটে গেলাম! প্রথমে যে সদ্য বিধবা হওয়া ভাবীর সাথে দেখা করলাম, তিনি আমাদের দেখে কাঁদলেন, কিন্তু বললেন, অনেক বিরক্ত সহ্য করেছি, ভাবতাম মরে গেলে ভালো হতো, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি মরে যাবে ভাবী নাই! স্মর্তব্য, ভদ্রলোক সারা জীবন দেশের সীমান্তে কাটিয়েছেন, বছরে একমাস স্ত্রী সন্তানের সঙ্গ দিতে পেরেছেন।
চাকরি অবসরে বাড়ীতে এসে বসার পরে স্ত্রী সন্তান প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়ায়! তার কমান্ড বা উপদেশ অসহ্য হয়ে উঠে সবার কাছে! শুনেছি, ছেলে মেয়েরা মিলে তাকে একবার শারিরীক নির্যাতন ও করেছে!

ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102