প্রেসবিজ্ঞপ্তি
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেছেন, ‘এখন সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও বিকেলে ভোট বর্জন করতে দেখা যায়। ডাকসুতে এত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলমত ও ধর্ম-নির্বিশেষে সব ছাত্রছাত্রী ভোট দিয়েছে। নির্বাচনের জন্য যত ফেনা তুলতেছি, ভোটের রায় মানার ক্ষেত্রে যদি পেছনে থাকি, তাহলে কিš‘ হবে না। কে নির্বাচিত হবে, কে সরকার গঠন করবে, জনগণের ভোটের মতামতে সেটা হবে। আমরা সে রায় মেনে আগামী দিনে বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাব।’
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক মঞ্চ আয়োজিত ‘৭২ সংবিধান, রাষ্ট্র সংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাগরিক মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী আহসান উল্লাহ শামিমের সভাপতিত্বে ও মো: হুমায়ুন কবির এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রি. জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আজমী,
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাগরিক মঞ্চের উপদেষ্টা কর্ণেল (অবঃ) খন্দকার ফরিদুল আকবর, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, মুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, মেজর ( অব.) আমিন আহমেদ আফসারী, এনডিপির চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, হেফাজতে ইসলাম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এর নায়েবে আমির মুফতি মোঃ আহম্মেদ আলী কাশেমী, মোঃ নজরুল ইসলাম, পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশের আমির অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম ফারুকী ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবু হানিফ খান, নিরপেক্ষ জনতার ফেরামের চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) ড. মাসুদুল হাসান, বাংলাদেশ ইসলামী দলের চেয়ারম্যান মুফতি শামসুল হক ফারুকী, মহাসচিব মোঃ হুমায়ুন কবির, জাতীয় ঐক্যজোট এর প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা আলতাফ হোসেন মোল্লা,বাংলাদেশ মানবিক পার্টির চেয়ারম্যান শওকত হোসাইন শুভ, বাংলাদেশ ছাত্র-জনতা পার্টির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন, দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির মহাসচিব মোঃ আলতাফ হোসাইন, বাংলাদেশ মুক্তি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোঃ দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া, ইউনাইটেড পাবলিক কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ মাহবুবুর রহমান, মহাসচিব মাওলানা আবু নোমান, জাতীয় ঐক্য সংহতি পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ নাজিমুল হক, ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট এর চেয়ারম্যান শাহ সুফী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হান্নান আল হাদী, বাংলাদেশ পিপল্স পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ তৃণমূল পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রানা, জাতীয় সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি শিল্পী মোঃ আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মারুফ মিয়া, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দলের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
জুলাই সনদ নিয়ে আবদুল হালিম আরো বলেন, ‘জুলাই সনদ এটা কোনো একক দলের দাবি নয়। এখানে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি নয় শুধু, সবারই।’ জাতীয় নির্বাচন দেয়ার আগে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে দিয়েছে সে সকল সেক্টর পুর্ণভাবে সংস্কার করে দেশকে স্বাভাবিক গতিতে নিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতিগ্রস্তরাই সংস্কার করতে ভয় পায়, কারণ তারা জানে সংস্কার করলে তারা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাট করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। ১৭৩ বার হরতাল করার পর এটা সংবিধানে যুক্ত হয়ে গেছে। আবার আওয়ামী লীগ করল কি, এই কেয়ারটেকার মাধ্যমে ২০০৮-এ ক্ষমতায় আসল। আসার পর ২০১১ সালে এটারে কবর দিয়েছে। সে জন্য আমরা বলি যে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন করে আপনারা পারবেন—এটাই এ দেশের জনগণ মানবে না। তবে অবশ্যই ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত, আমরা মনে করি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা এখানে যারা আছি, সবাই প্র¯‘ত। কিš‘ জুলাই সনদের আইন ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন মানব না।’
আবদুল্লাহিল আমান আজমী বলেন, ‘যারা সংবিধান প্রণয়ন করেছেন, তাদেও অন্যতম একজন ড. কামাল হোসেনকে আমি ২০০৭ সালে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, উনি আমাকে এর জবাব দিতে পারেননি যে এই সংবিধান করার জন্য একটা রেফারেন্ডাম করা উচিত ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে বহু গণভোটের ইতিহাস আছে, আমাদের দেশেও আছে। গণভোট করে একটা নতুন করে সংবিধান করা হতো এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যদি ঘটানো হতো, তাহলে এটাকে আমি বৈধ বলে মেনে নিতাম। আমি অন্তর থেকে এটাকে বৈধ বলে মেনে নিতে পারি না।’ আমি রাজনীতি করি না, তবে রাজনীতি করা থেকে বিরতও থাকবো না। দেশের এই অচলাবস্থা সচল করতে আর বসে থাকা যায় না। সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে, তবে পিআর এর বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রেখে সার্বিক আলোচনা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আগামীতে ইসলাম পন্থীদেরকে ক্ষমতায় এনে দুর্নীতি, দুঃশাসন বন্ধ করে দেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী আহসান উল্লাহ শামীম বলেন, রাজনীতির অঙ্গণে যারা নিজেদেরকে বড় বড় দল বলে অহংকার করতো এবং বিগত দিনে জনগণকে বোকা বানিয়ে একের পর এক ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করে দুর্নীতিতে দেশকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল তাদের রাজনৈতিক দিন ছোট হয়ে আসছে। যার প্রামণ হয়েছে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে বিপুল ব্যবধানে হেরে যাওয়া। নতুন প্রজন্ম এক স্বৈরাচারকে হটিয়েছে অন্য কোন স্বৈরাচারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। তরুণরা পরিবর্তন চায়, আর এই পরিবর্তনই ইসলামপন্থীদের ক্ষমতা গ্রহণ করার মধ্য দিয়েই হবে ইনশাহ আল্লাহ।