
লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
জাতিসংঘে এক বিরল ঘটনা ঘটে গেলো! ইসরায়েলের নেতানিয়াহু ভাষনে দাঁড়ালে একে একে সব দেশের সরকার প্রধান হল ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন!
দ্বিতীয় ঘটনা, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট “পেট্রো” ভাষনে বললেন, নেতানিয়াহু নব্য হিটলার, নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে ফিলিস্তিন মুসলমানদের বাঁচাতে এশিয়ার দেশগুলোর উচিত একটা এশিয়ান সামরিক জোট করে তাদের পিছে দাঁড়ানো। আপনারা ফিলিস্তিন কে রক্ষা করুন! ভাষনে তিনি এ-ও বলেন, জাতিসংঘ কে বদলানো প্রয়োজন! হয়তো তিনি বলতে চেয়েছেন, “মার্কিন জো হুজুর জাতিসংঘ পরিবর্তন প্রয়োজন!” তিনি ২০২৩ সালে নেতানিয়াহু কে গনহত্যা কারী বলে আখ্যায়িত করেছিলেন! প্রেসিডেন্ট “পেট্রোর” ভাষন শেষে ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধান “সুলাদা সিলভা” আবেগ প্রবন হয়ে ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় চুমু খান!
এসব দেখে মনে হলো, ল্যাতিন আমেরিকার দেশগুলো মার্কিন নীতি অপছন্দ করে সরে আসছে আলাদা মানবিক জোটে এবং ডলার নীতি বয়কট করে BRICS সদস্য হতে আগ্রহী সবদেশ!
তৃতীয় ঘটনা আরও চমকপ্রদ — আমাদের প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে পৌঁছাতে প্রায় ১০৪ জনের বহর নিয়ে গেছেন। দারুন প্রতিরোধে পড়েছেন আওয়ামী লীগের গুন্ডাপান্ডা বা সমর্থকদের! পঁচা ডিম স্পষ্ট দেখা গেছে কারো কোটের পিছনে! এমন প্রতিরোধে ১৯৬ টা সদস্য দেশের কোন প্রতিনিধি পড়েন নাই! জনাব ফখরুল নিজেই পুলিশ ও সমর্থক বেষ্টনী দিয়ে বেরিয়েছেন। সেই বিমানবন্দর থেকে হোটেল, জাতিসংঘ অফিস পর্যন্ত! মজার কথা সেই এককালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত “পিটার হাসের” সাথে জামাত বিএনপি প্রতিনিধিরা মিটিং করেছেন! মির্জা ফখরুল সাহেব যে পিটার হাস কে জনসভায় ” “দেবতা” সম্বোধন করেছিলেন!
প্রিয় পাঠক, আমরা কেমন মুসলমান এ কথাটা আমি অনেক সময় বলে থাকি! কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বা ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধান কেন আমাদের থেকে বেশী মানবতাবাদী হতে পারেন, আমরা কেন পারি না! মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবন শুরু করতে হয় ব্যক্তি থেকে, পরিবার থেকে, সমাজ থেকে, রাষ্ট্র থেকে এবং তারপর বিশ্ব সংস্থা একজন মানবতাবাদী মানুষ পেতে পারে! আমরা ব্যক্তি জীবনে একটা জায়নামাজ বগলদাবা করে মসজিদে যাওয়া ছাড়া আর কোন মুসলমানিত্বের ধার ধারি না! ঐ জায়গাটায় পয়সা লাগে না! নামাজ তো মোমেনের জন্য, আপনি কি মোমেন?
ব্যক্তি জীবনে কি কারো উপকার করেছেন, পাড়ার কারো, সমাজের কারো, যৌথ পরিবারের কারো?
আপনি নিজে মানবিক মনুষ্যত্ব সম্পন্ন না হলে আপনার আওলাদ রক্তের ধারাবাহিকতায় আরো কঠোর কৃপণ, অমানবিক, নিষ্ঠুর, অভদ্র হবে, মোমেন হবে না। আল্লাহ তার কুরআনে বলেছেন, “আমি আমার মোমেন বান্দাকে রক্ষা করি!” তাহলে ২০০ কোটি মুসলমান কি কেউ মোমেন না? সবাই লেবাসধারী শো নামাজি মুসলমান? আপনি একটু আলাদা হয়ে দেখেন, নামাজ মোমেনের জন্য,
আপনি কি জানেন কাদের এবাদত কবুল হয় না? যার ভিতর ক্ষমা নাই, যে পরোপকারী নয়, যে সুদ ঘুষ খায়, যে মনে হিংসা বিদ্বেষ দাম্ভিকতা পোষণ করে, যে উপকারীর উপকার স্বীকার করে না, যে শিরক করে, যে সম্পদের গর্বে নিজেকে উঁচু আসনের মনে করে, যে মা-বাবা ভাই-বোনে কোন উপকারে আসে নাই কোনদিন, যে ধর্ষক, যে কারূনের বংশধর, যে আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে দাড়ায়। যে গোত্র পরিচয় কে বিশাল মনে করে, আমি চৌধুরী, শেখ, পাঠান! এমন লোকের আওলাদ আগামী দিনের ধর্মের ভিতর থেকেও অমানবিক নিষ্ঠুর ভাইরাস যা সারা বিশ্বে এমন ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র থেকে বিশ্বে ছড়িয়ে একজন নেতানিয়াহু পয়দা হয়েছে!
পাঠক, আমরাতো সেই মুসলমান যারা ইয়েমেনের হুতিদের নিক্ষেপ করা মিশাইল আয়রন ডোম দিয়ে ভূপাতিত করি আমেরিকা কে খুশি করতে, ইরানের মিশাইল তিনটা মুসলমান দেশের আকাশ প্রতিরোধ পার হয়ে ইসরায়েলের মাটিতে পড়েছে ১০% মাত্র। যে ইসরায়েল কয়েক মাসে ৬ টা মুসলিম দেশ আক্রমণ করেছে, তার পিছনে আমেরিকা। যে আমেরিকা আফগানিস্তান ইরাক সিরিয়া লিবিয়া পাকিস্তান ইরান ফিলিস্তিন কোরিয়া কম্বোডিয়া ভিয়েতনাম কে ধ্বংস করেছে, আবার আফগানিস্তানের “বাগরাম” বিমান বন্দর দখলে নিতে চায়, সেই আমেরিকা কে আমরা ডেকে আনি দেবতা বলে!
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আমাদের কি শিখালেন? ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধান কি শিখালেন? ইতালির ত্রান জাহাজে ইসরায়েলের হামলার জন্য এবার ইতালির প্রেসিডেন্ট গাজায় ত্রান পাঠানো জাহাজের সাথে যুদ্ধ জাহাজ পাঠিয়ে নেতানিয়াহু কে হুশিয়ার করেছেন, “এবার ত্রান বাহী জাহাজে হামলা করলে কঠোর জবাব দেয়া হবে! আগেই বলেছি, মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবন অধিকারী হতে হয় পরিবার থেকে, পরিবেশ থেকে, সমাজ থেকে, রাষ্ট্র থেকে তারপর তৈরি হয় একজন P E T R O.
এ ছাড়া একা পেটপুরে খেয়ে সোনা দিয়ে তৈরি টয়লেটে মল নিঃসরণ করলে তাকে আল্লাহ মানুষ তথা কোন ধর্মের লোক মনে করেন না, মুসলমান তো নয় ই!
মনে রাখবেন, কিছু লোক আছে তারা উপকার করে কারো উপকার খোজে না! তারা “সৃষ্টি কর্তা” নির্ভরশীল, কোন মানুষের প্রত্যাশা করে না! ইরান দীর্ঘদিন একাকিত্ব বেঁচে আছে বলেই আজ মুসলমান ৫৭ টা দেশ ইরানে এসে একত্রে কাজ করার জন্য আলোচনা করতেছে, কারন স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের কাতার আমেরিকা গভীর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে! ইসরায়েল আক্রমণ হয়েছে অবশ্যই মার্কিন ইঙ্গিতে! ব্যক্তি জীবনে ও কারো ভুল ভাঙে না যতক্ষণ স্ত্রীর শাড়ী খোলার চেষ্টা না হয়! মার্কিন স্ত্রী নামক কাতার নিজে আক্রান্ত হয়ে বুঝেছে ধর্ষকের কেউ মামী শ্বাশুড়ি নয়!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন। নিজে মানবতা মনুষ্যত্ব সম্পন্ন মানুষ হন, আগামী প্রজন্ম কে মানুষ বানায় যান!