মোঃ রায়হান পারভেজ নয়ন
ডিমলা নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক ও রাজনীতিবি মাওলানা রফিকুল ইসলাম (সহকারী সুপার, ছাতনাই বালাপাড়া বন্দর খরিবাড়ি দাখিল মাদ্রাসা) মারা গেছেন। রবিবার ১১ টায় গায়বাড়ি ইস্কুল এন্ড কলেজের সামনে ট্রাক টোলের সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান পথেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
মাওলানা রফিকুল ইসলাম নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকার গ্রামের সন্তান। তার পিতা মরহুম আমিন উদ্দীন। মরুহম মওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম তিনি দীর্ঘদিন ধরে ছাতনাই বালাপাড়া বন্দর খড়িবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী সুপার পদে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সমাজে ন্যায়পরায়ণতা, শিক্ষার প্রসার এবং মানবকল্যাণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন।
শিক্ষাক্ষেত্রের বাইরে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ডিমলা উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তার অবদান এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসিত ছিল।
মৃত্যুকালে মাওলানা রফিকুল ইসলাম তিন পুত্র, এক কন্যা, স্ত্রীসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। হঠাৎ তার অকাল মৃত্যুতে পরিবার-পরিজন, সহকর্মী শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা গভীর শোকাহত হয়ে পড়েছেন।
তার মৃত্যুতে পুরো ডিমলা উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মাওলানা মুজিবুর রহমান, নায়েবে আমির কাজী হাবিবুর রহমান ও উপজেলা সেক্রেটারি কাজী রোকনুজ্জামান বকুল এক বিবৃতিতে বলেন
মাওলানা রফিকুল ইসলাম ছিলেন সংগঠনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগী কর্মী। তিনি শিক্ষকতা, সমাজসেবা ও সংগঠনের প্রতিটি কাজে আন্তরিকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা এক মহানুভব ব্যক্তিত্বকে হারালাম।
এছাড়া জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার ও জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন
মওলানা রফিকুল ইসলাম ছিলেন সংগঠনের প্রাণপুরুষ। তার জীবন ছিল সততা, অধ্যবসায় ও নিবেদনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার মতো একজন নিষ্ঠাবান মানুষকে হারানো আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সহকর্মীরা বলেন, তিনি ছিলেন একজন সৎ, নীতিবান ও অত্যন্ত নম্র স্বভাবের মানুষ। স্থানীয়রা জানান, শুধু শিক্ষক হিসেবেই নয়, তিনি সমাজের যে কোনো সমস্যায় সবসময় এগিয়ে আসতেন।
সংবাদ লেখা পর্যন্ত তার জানাজা ও দাফনের সময়সূচি নির্ধারিত হয়নি। তবে গ্রামবাসী, রাজনৈতিক সহকর্মী, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।
একজন আলেমে দ্বীন, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও সমাজসেবকে ও রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে ডিমলা উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মাওলানা রফিকুল ইসলামের অবদান এলাকাবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন জেলার ও উপজেলার রাজনৈতিক ও সর্বস্তরের মানুষ।