মোঃ নুর ইসলাম মৃধা
আজকের রাজনীতি আমাদের সামনে যে নির্মম বাস্তবতা উপস্থাপন করছে, তা একেবারেই স্পষ্ট—
“জীবন দিবে গরিব মানুষ, রক্ত দিবে মধ্যবিত্ত, আর ভোগ করবে উচ্চবিত্ত।”
এটি কেবল একটি অভিযোগ নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা শোষণের চিত্র। গরিব মানুষ রাজনৈতিক সহিংসতার বলি হয়, মধ্যবিত্ত শ্রেণি রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখে, অথচ ক্ষমতাধর উচ্চবিত্ত শ্রেণি সেই ত্যাগের ফসল ভোগ করে। প্রশ্ন জাগে—এটাই কি রাজনীতি? এভাবেই কি চলতে থাকবে?
শোষণের অচলাবস্থাঃ
বাংলাদেশের ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের দাবিতে প্রথমে এগিয়ে আসে সাধারণ মানুষ। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নামে, গণআন্দোলনের বীজ বপন করে। কিন্তু যখন পরিবর্তনের সুফল ভোগ করার সময় আসে, তখন দেখা যায় ক্ষমতার আসনে বসেছে সেই একই শ্রেণি—যারা গরিবের ঘাম শুকায়, মধ্যবিত্তের রক্ত নেয়, আর নিজেদের বিলাসিতা নিশ্চিত করে।
পরিবর্তনের অপরিহার্যতাঃ
একটা সমাজ বা রাষ্ট্র কেবল ধনীদের স্বার্থরক্ষার জন্য টিকে থাকতে পারে না। যদি রাজনীতি কেবল ধনী ও ক্ষমতাবানদের ভোগের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়, তবে সাধারণ মানুষের আস্থা হারানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। তখন গণতন্ত্র কেবল নামেই থাকে, বাস্তবে সেটি রূপ নেয় গোষ্ঠীস্বার্থের খেলায়।
জনতার ঐক্যের ডাকঃ
আজ সময় এসেছে নতুন করে ভাবার—“দেশ কি আর পরিবর্তন হবে না?”
পরিবর্তন আসবেই, যদি জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়। স্লোগানটি কেবল আবেগের আহ্বান নয়—
“জেগে ওঠো জনতা, গড়ে তোলো একতা।”
এটাই হলো ভবিষ্যতের মুক্তির পথ। ইতিহাস সাক্ষী, যে জাতি একতাবদ্ধ হয়, তারাই অন্যায়ের শৃঙ্খল ভেঙে নতুন ভোরের সূচনা করে।
শেষকথাঃ
আমাদের এই প্রিয় দেশের রাজনীতি তখনই শুদ্ধ হবে, যখন ক্ষমতার স্বাদ শুধু উচ্চবিত্তের মুখে নয়, বরং গরিব, মধ্যবিত্ত ও প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদায় প্রতিফলিত হবে। না হলে এই রাজনীতি থাকবে বৈষম্যের প্রতীক হিসেবে। তাই এখনই সময় প্রশ্ন তোলার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার, আর ঐক্যের শক্তিতে গড়ে তোলার একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র।
মোঃ নুর ইসলাম মৃধা
এম এ, এলএল বি
এল এইচ এম পি।