শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে দেওয়া কথা শেখ হাসিনা রাখেননি: দুলু

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৩৯ Time View

 

মোঃ ইউসুফ খাঁন, রংপুর:

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে দেওয়া কথা শেখ হাসিনা রাখেননি।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন,

দুলু বলেন, ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার কথা দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্নতরী তিস্তার তীরে নিয়ে এসে ডুবিয়ে দিয়েছিল। আমরা আর আশাহত হতে চাই না।

আমরা চাই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে নিজস্ব কোষাগার থেকে প্রস্তাবিত দুই হাজার ৪১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদকালে তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজের উদ্বোধন করা হোক। পরে নির্বাচিত সরকার যারাই আসবেন তারা এ কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। এ কাজের জন্য জরুরি প্রয়োজন আগামী একনেক সভায় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বৈষম্যপীড়িত তিস্তা অববাহিকার দুই কোটি মানুষের প্রাণের দাবি উল্লেখ করে দুলু বলেন, এ দাবিতে জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির ব্যানারে গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ১১৫ কিলোমিটার বিস্তৃত তিস্তার দুই তীরে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে তিস্তা পাড়ের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টের প্রতিটিতে লাখো মানুষ অংশ নেয়। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পাশাপাশি তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদসহ এ অঞ্চলের সব রাজনৈতিক দল, জাতীয় নেতৃবৃন্দ, ছাত্র, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এ দাবিতে ঐক্যমত্য পোষণ করেছে।

দুলু বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের সাড়া জাগানো আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। সরকার প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নির্দেশনায় পাওয়ার চায়নার সঙ্গে এমইও চুক্তি নতুন করে নবায়িত হয়। সরকার প্রধানের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের

গত ৬ ফেব্রুয়ারি কাউনিয়া রেলসেতু চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গণশুনানি। এসময় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির ব্যানারে আমাদের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পক্ষে মতামত তুলে ধরেন। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত কথা মোতাবেক ইতোমধ্যে পাওয়ার চায়নার সঙ্গে পাঁচ জেলায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা, চীনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে।

সম্প্রতি সরকারের পক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমে বলেছেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ বছর মেয়াদি প্রকল্পের প্রথম পর্যায় (৫ বছর) বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭শ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে।

চীনের সঙ্গে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাগ্রিমেন্ট এখনো হয়নি জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এ বিষয়টিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে চীন কাজ করছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, চলতি বছরের শেষে চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি এবং ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। তার আগে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্বোধনের দাবিতে ৫ অক্টোবার রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় পদযাত্রা। পদযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ৯ অক্টোবর উপজেলা পর্যায়ে গণসমাবেশ এবং ১৬ অক্টোবর ১০ উপজেলার ১১টি স্থানে একযোগে মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

এসময় রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুসহ বিএনপির অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102