
রানু রহমান, মুর্শিদাবাদ (পশ্চিমবঙ্গ) ভারত
বাঙালির প্রাণের উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে এই তো সেদিন। এখন বিজয়ার আলিঙ্গন প্রীতি শুভেচ্ছা বিনিময় আর মিষ্টি মুখের পালা বাঙালির ঘরে ঘরে। স্কুল কলেজ সরকারি অফিস সব বন্ধ। এদিকে আবহাওয়ায় নিম্ন চাপের ভ্রূকুটি। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে অবসর অবকাশ কাটাতে এসেছিলেন চন্দ্রযান ৩ এর সফল নায়ক ইসরোর বিজ্ঞানী ড মোশাররফ হোসেন। বীরভূম জেলার অভিভক্ত মুরারই থানার বর্তমানে পাইকর থানার বিলাসপুর গ্রামে বাড়ি হলেও চন্দ্রযান ৩ সফলতা পাবার পর তিনি পড়শী জেলা মুর্শিদাবাদের মানুষেরও চোখের মণি গর্বের ধন হয়ে ওঠেন। তাঁকে চোখে দেখার ও তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শুনতে স্কুল কলেজের শিক্ষক– শিক্ষিকা ছাত্র– ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এমন একজন ইসরোর বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের ‘সিনিয়র সায়েন্টিস্ট’র অভিজ্ঞতার কথা শুনতে ইতিহাস প্রসিদ্ধ মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি এলাকার কুসুমগাছি আর এন পাবলিক স্কুল (এইচ এস) র কনফারেন্স রুমে একটি সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। বৃষ্টি মুখর আশ্বিনের বিকেলে লেখনী মন্ডলের গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধান শিক্ষক তথা সম্পাদক আবু তাহের সেখ প্রারম্ভিক ভাষণ দেন। পরিচয় পর্বে সকলের সাথে পরিচিত হয়ে খুব গর্ব অনুভব করেন বিজ্ঞানী। কথা কবিতা গানের পর শুরু হয় সংবর্ধনা প্রদান।কপালে চন্দনের টিপ পড়ায় ছাত্রী রিয়া মন্ডল, ব্যাজ পড়িয়ে বরণ করেন সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন, উত্তরীয় পড়ান প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট মহ নূরুজ্জামান, ফুলের তোড়া তুলে দেন কোষাধ্যক্ষ মনিরুল হক এবং স্মারক প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক আবু তাহের সেখ। সংবর্ধনা পাওয়ার পর বিজ্ঞানী ড মোশাররফ আর এন পাবলিক স্কুলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং চন্দ্রযান ৩ সাফল্য অর্জন বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা সবার সঙ্গে শেয়ার করেন। অনুষ্ঠানে অণুগল্পকার মতিয়ার রহমান তাঁর লেখা “অপেক্ষা:ভালোবাসা” বইখানি তাঁর হাতে তুলে দেন এবং বাংলাদেশ থেকে আনা শাপলা ফুল স্মারক হিসেবে তাঁর হাতে তুলে দিয়ে এতদিনে আদর্শ উপহারটি একজন আদর্শ মানুষকেই দিতে পেরে নিজেকে কৃতার্থ মনে করছেন বলে মত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে মুরারই কাজী নজরুল ইসলাম ৫০ তম প্রয়াণ বার্ষিকী উদযাপন কমিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরাও বিজ্ঞানী ড মোশাররফ হোসেনের হাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ উপহার হিসেবে তুলে দেন।
বাইরে অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে কখন। বৃষ্টি হয়ে গেছে এক পশলা। সে খেয়াল নেই কারুরই। মন্ত্র মুগ্ধের মতো কথা শুনতে ব্যস্ত সবাই। এমন একটি ঐতিহাসিক সন্ধ্যার সাক্ষী থাকতে পেরে উপস্থিত সকলেই খুব খুশি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থায়ী সভাপতি মহ নূরুজ্জামান। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।