লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আফগানিস্তান পাকিস্তান যুদ্ধ কেন লাগলো, কোথা থেকে কার স্বার্থে শুরু? বিশ্ব মুরব্বি ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানের কাছে "বাগরাম" বিমান ঘাঁটি চেয়ে বসলেন! চেঙ্গিস খান যুগের মত তিনি যা চান তা দখল করে ছাড়েন! বাগরাম বিমান বন্দর বিশ্বের কয়েকটা বিমান বন্দরের মধ্যে একটা! সেখান থেকে চীন ইরান বাংলাদেশ রাশিয়া ভারত মোটামুটি দক্ষিণ এশিয়ার জিও পলিটিক্সে তার হাতে চলে যায়! আফগানিস্তান সরাসরি প্রতিবাদ করায় বিশ্ব বোকা পাকিস্তান ট্রাম্প কে খুশি করতে কাবুলে বোমা ফেলে পালিয়ে যায়! ট্রাম্প স্যার মহাখুশি হয়ে পাকিস্তানের বন্যার ত্রান বলে অস্ত্র পাঠাচ্ছে! তার আগে "সৌদি পাকিস্তান সামরিক চুক্তি করিয়ে দিয়েছে"! মোট কথা পাকিস্তান বেঁচে আছে ইমরান পতনের পর চীনের সাহায্য (২ বার) এবং সৌদি সেলাইন নিয়ে! তবু যুদ্ধ বাজি থামে না! ১৯৭১ সালে ভারত কে সুযোগ করে দিয়েছিলো বাংলাদেশের পক্ষে সরাসরি নামতে, ভারতের ৮ টা বিমান ঘাঁটি আক্রমণ করে!
" "বাগরাম" বিমান বন্দর রক্ষা করতে চীন রীতিমতো পরের দিন পরমাণু মিশাইল সহ এয়ার এ্যাটাক বিমান নিয়ে সেই বন্দরে ই অবস্থান নিয়েছে! উল্লেখ্য, পাকিস্তানে খাদ্য অভাব, রিজার্ভ নাই, আমদানি বন্ধ, বাংলাদেশ নিয়ে বিশাল মোড়ল গিরি, একদিকে ভারত পাকিস্তান ৩,৩২৩ কিলোমিটার সীমান্ত পাহারায় রাখতে হয়, আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের সীমান্ত (ডুরান্ড লাইন) ২,৬৭০ কিলোমিটারে যুদ্ধ, বেলুচিস্তানের মুক্তি যোদ্ধারারা (B L A) যখন তখন হামলা করছে গেরিলা কায়দায়! এমন ত্রিমাত্রিক আক্রমণে থেকে ও বাংলাদেশে নাক গলায়ে বাঙলাদেশ কে ১৯৭১ সাল বানানোর চেষ্টা এক আহম্মকের মস্তিষ্ক নিসৃত পরিকল্পনা! ১৯৬২ সালে চীন কে ডেকে এনে কাশ্মীর আক্রমণ করায় আজীবন কাশ্মীর কে বন্দী খাঁচায় ঢুকিয়েছে। আজ ২৫% কাশ্মীর চীনের অধীনে, ৪০% ভারতের অধীনে এবং ৩৫% পাকিস্তানের অধীনে! তিন দেশ থেকে কাশ্মীর কোন দিন ও মুক্ত হতে পারবে না! কাশ্মীরের এ অবস্থার জন্য পাকিস্তান দায়ী!
পাকিস্তান আফগানিস্তান বৈরিতা কেন? এ বৈরিতা ১৮৯৯ সালে বৃটিশ কতৃক ডুরাল্ড সীমান্ত চিহ্নিত করার পর থেকে! আফগানিস্তান এই সীমান্ত মেনে নেয় নাই! তারা পাকিস্তান রাষ্ট্র কে ও জাতিসংঘে স্বীকৃতি দেয় নাই! আফগান "পশতু" নামে একটা দেশ চেয়েছিলো পাকিস্তান নয়! এ কারনে ১৯৬৫ সালে কাবুলে পাক পতাকা পোড়ানো হয়!
১৯৭৯ সালে কমিউনিস্ট সরকার "বাররাক কারমালকে" রক্ষা করতে "সোভিয়েত ইউনিয়ন" ঐ বছর ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠায়! মার্কিন সহায়তায় তৈরি হয় "ওসামা বিন লাদেন" এবং মার্কিন নির্দেশে পাকিস্তান আফগানিস্তানের কট্টর মোল্লা তালেবানদের প্রশিক্ষণ দেয়, তারাই যুদ্ধ করে ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সেনা তাড়ায় "মোল্লা ওমর" সম্ভবত ক্ষমতায় এসে নারী ঘর বন্দী করে! খেলাধুলা গান সব বন্ধ করে দেয়!
গৃহ যুদ্ধ হয়, তখন পাকিস্তান যে তালেবান প্রশিক্ষণ দিয়েছিলো, তারা আজ দুইভাগে বিভক্ত T T B পাক পন্হী এবং A T আফগান তালেবান! ২০০১ সালে আমেরিকার টুইন টাওয়ার বিল্ডিংয়ের ধ্বংসের রেশ ধরে আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমণ করে এবং লাদেন কে পাক আশ্রয় থেকে হত্যা করে!
২০২১ সালে আমেরিকা আফগানিস্তানে পরাজিত হয়ে আমেরিকায় সব সেনা এবং আফগান কিছু সমর্থক নিয়ে পালায়, অনেক টা "ভিয়েতনাম" থেকে পালানোর কায়দায়! সমস্ত লাইট অফ করে
ব্লাকআউট করে!
প্রিয় পাঠক, আফগানিস্তান কখনও যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে রেহাই পায় নাই সেই 'জহির শাহের' শাসন কালের উন্নত আফগান ধূলিসাৎ হয়েছে যুদ্ধ নামক দানব চাপিয়ে দিয়েছে বার-বার বহিঃশত্রু এসে! বর্তমান সারা বিশ্বে যুদ্ধ, "বাংলাদেশ নামক দেশটা" হয়ে গেলো যুদ্ধ ময়দান! শেষ আশা টুকুন ও বোধ হয়, শেষ হয়ে গেলো! আজ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন জ্বলছে, এ যেন এক গাঁজা বা আফগানিস্তানের দৃশ্য! বাংলাদেশ কুরআনের মুসলমান হতে চায় পাকিস্তানের মুসলমান নয়, মুসলমান আছে ইসলাম নাই এমন হলেই শর্ত ভেঙে আফগানিস্তানে বিমান হামলা করা যায়, ১৭ ই অক্টোবর পাকিস্তানের আক্রমণে আফগানিস্তানের ২০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, প্রায় ২৫০ জন নিরীহ মানুষ হত্যা। কোথায় বিমান হামলা করে তা-ও যুদ্ধ নিয়ম নীতি মানে না!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।