মোঃ রফিকুল ইসলাম টিটু, ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জে ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বিরামপুর নয়াপাড়া গ্রামে ভুল রেকর্ড ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এক পরিবারের ৭০ বছরের বসতভিটা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বকুল মিয়ার স্ত্রী ও ছেলে। গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা বর্তমানে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সূত্রপাত ভূমি রেকর্ডের ভুল থেকে। সরজমিনে জানা যায়, মৃত গোলাম হোসেন ছিলেন ওই জমির প্রকৃত মালিক। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে বকুল মিয়া ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক হন এবং পরিবারসহ দীর্ঘদিন সেখানে বসবাস করেন।
অভাব-অনটনে পড়ে বকুল মিয়া সিলেটে চলে গেলে বাড়ির দায়িত্ব দেন চাচাতো ভাই আব্দুল হাইয়ের হাতে। কিন্তু ভূমি জরিপের সময় ভুলবশত ওই জমি রেকর্ড হয়ে যায় আব্দুল হাইয়ের নামে। পরে আব্দুল হাই মাত্র ১০ টাকায় জমিটি বিক্রি করেন প্রতিবেশী আজব আলীর কাছে, যিনি পরবর্তীতে নিজের ভাই আছাব আলীর নামে নামজারি করে নেন।
সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, নাম খারিজ হলে জমিটি ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু নাম খারিজের পর আছাব আলী মত পাল্টে দাবি করেন, তিনি বৈধ মালিক। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়।
আছাব আলী বলেন, “আমি বৈধ দলিল ও নামজারি অনুযায়ী জায়গার মালিক। তারা অহেতুক ঝগড়া করছে, আমরা আইনের বিচার চাই।”
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মতে, রেকর্ডের ত্রুটি ও প্রশাসনিক নজরদারির অভাব থেকেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানান, এখন পুরো গ্রাম বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
সেলবরষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফরিদ খোকা বলেন, “একাধিকবার আপোষ ও সালিশের চেষ্টা করা হলেও আছাব আলী প্রথমে রাজি হয়ে পরে অস্বীকার করেন।”
বকুল মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি।”
স্থানীয়দের আশঙ্কা, ভূমি প্রশাসনের কার্যকর তদারকি ও জরিপে স্বচ্ছতা না থাকলে ভবিষ্যতে এমন পারিবারিক দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে পারে।