
লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
জীবন অভিজ্ঞতা বলে, “মানুষ শান্তি চায় না”! ধর্ম মানে না! মানবতা মনুষ্যত্ব তার ভিতর জাগ্রত হয়না! কাল মৃত্যুর দিন তা ভাবে না! সারাবিশ্বে তার প্রতিফলন যুগযুগ! মানুষ উচ্চ শিক্ষাদীক্ষায় দীক্ষিত হয়েও “মানুষ” না! মুসলমানদের “মুসলিম খৃষ্টান হিন্দু ইহুদি প্রফেটরা কেউ , বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, লালন, মাদার তেরেসা, আইনস্টাইন কেউ “ডক্টরেট” ছিলেন না কিন্তু মানুষ ছিলেন! মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবনের অধিকারী ছিলেন! তাদের নিয়ে মানুষ থিসিস লিখে, ডক্টরেট করে কিন্তু তাদের মানবিক দিক শেখে না! মানুষ স্বভাবগত ভাবে স্বার্থপর, বেশরম” নির্লজ্জ, কৃপণ, আগ্রাসী, প্রতিশোধ পরায়ন, ক্ষমতা লোভী, অর্থলিপ্সু, সম্পদের অঢেল আকাঙ্খিত এক পশু! তারা পরোপকার ভুলে যায় নির্বিঘ্নে! পাপপুণ্য উপরে বলে ভিতরে বিশ্বাস করে না!
প্রিয় পাঠক, আমার উদ্দেশ্য আপনাদের জ্ঞান দেয়া না, আপনারা জ্ঞানী, শুধু স্মরন করানো ইতিহাসের মাধ্যমে!
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল জাতিসংঘ কতৃক স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করলে আরব দেশগুলো ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হয় এবং পরবর্তী মুসলিম নেতৃত্ব ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়! ১৯৫১ সালা জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহ ইসরায়েলের সাথে শান্তি স্হাপন করতে এগিয়ে গেলে তাকে হত্যার শিকার হতে হয়, ১৯৯৫ সালে ইসরায়েলের আইজাক রবিণ ফিলিস্তিনের সাথে সম্পর্ক উন্নয় করতে গেলে হত্যা হয়, ১৯৮১ সালে মিশরের আনোয়ার সাদাত, ১৯৮২ সালে লেবাননের বশির জামাল একই শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় হত্যা হয়! এমনি বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী হত্যা হয়েছে অপরাধ কারী হয় নাই! মধ্য যুগের চার কোটি মানুষ হত্যাকারী চেঙ্গিস খান হত্যা হন নাই, ৬০ লক্ষ মানুষ হত্যাকারী পিনাচোট হত্যা হন নাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবতা বাদী নেতা “লুথার কিং “, প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যা হয়েছেন কিন্তু মার্কিন আগ্রাসন বাদী কোন প্রেসিডেন্ট হত্যা হন নাই!
পাঠক, “অধিকার কর্তব্য আনয়ন করে” এ কথাটা ‘অধ্যাপক লাস্কির’ থিওরি। বাংলাদেশের জাতির জনক হত্যা কি দ্বিতীয় সামরি প্রধান মেজর জিয়া ঠেকাতে পারতেন, তা কি তার কর্তব্য ছিলো? “জিয়া হত্যা” কি ক্ষমতার জন্য জেনারেল এরশাদ উস্কে ছিলেন, জিয়াকে কি এরশাদের রক্ষা করা ফরজ ছিলো না, প্রেসিডেন্ট জিয়া তো তার জীবন বাচানোর জন্য “জেনারেল মঞ্জুর’ কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেনা প্রধান বানানোর, সেটা বরখেলাপ করে এরশাদ কে সেনাপ্রধান করায় সেই কৃতজ্ঞতায় জিয়াকে রক্ষা করা প্রয়োজন ছিলো কি-না?
একটা দেশের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান ও সেনা প্রধান একটা প্যাকেজ! বাংলাদেশের ইতিহাসে ডঃ ইউনূস বিশ্বে অত্যাধিক পরিচিত ব্যক্তি এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী! তিনি কি পারতেন না এই দেশটার লোকেরা আর কোনদিন রাজনৈতিক নেতাদের নাম মুখে আনবেন না এমন অবস্থায় দেশটাকে সাজাতে।
সেনাপ্রধান রাষ্ট্র প্রধান কি ডঃ ইউনূস স্যার কে গাইড করে সাজানো দেশটাকে ১/১১ ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিন সরকারের মত সব দুর্নীতি গ্রস্হ রাজনৈতিক নেতা, সন্ত্রাসী, ভন্ড ধার্মিক দের লাগাম টেনে বিশ্ব হিরো বনে যেতে! আজ যে অবস্থায় বাংলাদেশ নামক আগ্নেয় গিরির জ্বালামুখ দিয়ে তপ্ত লাভা নির্গত হচ্ছে তার থেকে কি কেউ রেহাই পাচ্ছেন? সাধারণ জনগন নাভিশ্বাস ও অবিশ্বাসের কারনে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করছে, পাঁচই আগষ্টের আগে ফিরে যেতে চায় মানুষ ! আমরা তো এমন টা আশা করি নাই! সব মানুষ ভেবেছেন, ডঃ ইউনূস আমাদের আশার স্হল! কিছু ভুল পদক্ষেপে ভেবেছে দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধান তো আছেন তিনি দেশ রক্ষা করবেন, মহামান্য প্রেসিডেন্ট কে জনগণ কোন আস্হায় আনতে পারছে না! দেশের স্হাপনা নতুন হচ্ছে না, পুরাতন গুলো ধ্বংস করা বা কোন দুষ্কৃতকারী দ্বারা ধ্বংস হওয়া, সবই সরকারের উপর দায়িত্ব বর্তায়! দেশে বিদেশি পদচারণা, অরক্ষিত সীমান্ত এহেন সংশয় নাই যে জনগণের মনে দানা বাঁধছে না! বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থা গুলো উদ্বিগ্ন, প্রায় দেড়শো রাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, সারা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশ নামক ক্ষুদ্র “ব” দ্বীপটার দিকে!
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যা হয়, তার মধ্যে শাকিল নামে একজন জেনারেল ও ছিলেন! ১৯৭৭/৭৮ সালে সেনা ক্যু কেন্দ্র করে অনেক সেনা জোয়ান ফাঁসি তে ঝুলানো হয়, মাত্র একজন “কর্ণেল ওসমানী” কে নিয়ে শুরু সেনাবাহিনী আজ অনেক মজবুত! সেনা তাকত ও অস্ত্রে বাংলাদেশের বিশ্ব শক্তির ক্রমিক নাম্বার সম্ভাবত ৪৭ ছিলো, এই গ্রেডে সেনা শক্তি কি ভারতের থ্রেট ছিলো, হাসিনা সরকার চীন থেকে দুটো সাবমেরিন কেনার সময় ভারত নাখোশ ছিলো!! আবার ও “সেনাবাহিনীর বিচারে” জনগণের কাছে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে পরোক্ষভাবে “আমরা কি ভারতকে সাহায্য করছি?” হাটে ঘাটে মাঠে আলোচনা হচ্ছে, ” জিয়া আমলে কোর্ট মার্শাল হয়ে ছিলো, সে ক্যাঙ্গারু কোর্টের বিচারক ছিলেন সামরিক ব্যক্তিত্ব!”
ভারত বিরোধী যত ক্ষোভ মানুষের ছিলো তা প্রশমিত হয়ে যাচ্ছে কারন ২৬ লক্ষ ভারতীয় চাকুরী জীবি আজও তাড়ানো হলো না, ইলিশ মাছ আগের থেকে দ্বিগুণ যাচ্ছে, ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আজ-ও হাসিনার বাঁধা উচ্চ রেটে কেনা হচ্ছে, বিগত সরকারের ভারতের সাথে করা কোন চুক্তি বাতিল করা হয় নাই এবং বর্তমান সরকারের সততায় কালিমা লেপন করেছন “ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং ২৯ মিলিয়ন কেচ্ছা বলে!”
এই ছোট্ট দেশটা সাঁতরাতে সাঁতরাতে একদিন কুল পাবে যে ১৯ কোটি জনগণ আশায় বুক বেঁধেছিল, সবাই আজ হতাশ বরং কেউ কেউ ভাবছে দেশটা বিশ্ব যুদ্ধ ফিল্ড হয়ে গেলো! ইউক্রেন গাঁজার মত ধ্বংসস্তূপ থেকে আর কেউ উঠে দাড়াতে পারেনা, আমরা ও দাঁড়াতে পারবো না কারন মেরুদণ্ডের গিট গুলো খুলে যাচ্ছে!!!!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।