বৃহস্পতিবার(২৩ অক্টোবর) হাসপাতালের পুরনো ভবনের গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বেডে একাধিক শিশু ভর্তি। নার্স ও চিকিৎসকরা রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের নিরলস সেবায় অনেক অভিভাবক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এখন শিশু রোগীর চাপ আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। লোকবল সংকট থাকায় আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। তবে চেষ্টা করছি যেন কোনো শিশুর চিকিৎসা বিলম্ব না হয়।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের আব্দুর রহিম জানান,আমার মেয়ে নুসরাতের হঠাৎ জ্বর আর কাশি শুরু হয়। বাড়িতে ওষুধ খাওয়ানোর পরও কমছিল না, তাই হাসপাতালে আনি। ডাক্তাররা বলেছেন,মেয়েটার নিউমোনিয়া হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।
মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ভাইজোরা গ্রামের গৃহবধূ ময়না বেগমবলেন, হঠাৎ করে ৩দিন আগে আমার ৬ মাসের বাচ্চা ঠান্ডা-কাশিতে আক্রান্ত হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়ে না কমায় আজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। এ ছাড়া, আমার পরিবারের সব সদস্যই জ্বর-কাশি ও গলা ব্যথায় আক্রান্ত। মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি, শীতের আগমন, অর্থাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে সদর হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে৷ অধিকাংশ শিশুই নিউজমোনিয়া আক্রান্ত। প্রতিদিন মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের বহিঃবিভাগে আমরা ৫বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিলে গড়ে ২০০-৩০০ শিশু রোগী দিতে হচ্ছে। অধিকাংশ শিশুরাই ঠান্ডা-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত। আর কয়েকদিন পরই শীত চলে আসবে, এতে আরও রোগীর চাপ বৃদ্ধি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতের সময় রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাই এ সময় বাচ্চাদের সতর্ক রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। ছয় মাসের বড় বাচ্চাদের অন্যান্য খাবার দিতে হবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এক ব্যাকটেরিয়ায় বৃদ্ধি পায়। এতেই শিশুদের যত্ন বা সচেতন না হলে তাদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময় ভাইরাসজনিত জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গু বা নিউমোনিয়ার মতো জটিল সংক্রমণও থাকতে পারে। এ কারণে শুধু ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা না করে লক্ষণ গুরুতর হলে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে। শিশু, বয়স্ক এবং যাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগ (ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃদরোগ) রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে জ্বর আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ সময় নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি পরিবার ও প্রতিবেশীদেরও সতর্ক করা জরুরি। ঘরে ঘরে জ্বরের এই প্রকোপ আমাদের জন্য সতর্কসংকেত। তবে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সময়মতো যত্ন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে বেশির ভাগ জ্বরই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। মনে রাখতে হবে–অবহেলা নয়, সচেতনতা ও প্রতিরোধই হলো সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র।
তারিখ- ২৩ .১০.২০২৫।