মোঃ রায়হান পারভেজ নয়ন
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
নীলফামারীতে সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) চারটি পোশাক কারখানা হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন হাজারো শ্রমিক। সোমবার সকালে কর্মস্থলে এসে হঠাৎ ‘কারখানা বন্ধ’ সংক্রান্ত নোটিশ দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ইপিজেড এলাকায় টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ৮টার দিকে উত্তরা ইপিজেডের প্রধান গেটের সামনে শতাধিক শ্রমিক জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। তারা বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং বন্ধ ঘোষিত কারখানাগুলো দ্রুত চালু করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো শিল্পাঞ্চলে।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ কোনো পূর্বঘোষণা বা আলোচনাবিহীনভাবে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক শ্রমিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেতন ছাড়াই বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাদের পরিবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক শাহিনুর বলেন, আমরা সকালে এসে দেখি গেটে নোটিশ টানানো। বলা হয়েছে কারখানা বন্ধ। কিন্তু কেন বন্ধ, কবে চালু হবে কেউ কিছু জানায় না। আমরা এখন কোথায় যাব
আরেক শ্রমিক মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ করে দিলে আমাদের সন্তানদের খাওয়াব কীভাবে
অন্যদিকে, ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাকের অর্ডার কমে যাওয়া এবং আর্থিক সংকটের কারণে এই চারটি কারখানা সাময়িকভাবে কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা নির্ধারিত নিয়মে পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
উত্তরা ইপিজেড প্রশাসক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শওকত আলী বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।
এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়, তবে শ্রমিকদের মধ্যে এখনও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, উত্তরা ইপিজেডে বর্তমানে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগে প্রায় ৪০টিরও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানকার কারখানাগুলোতে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। হঠাৎ চারটি কারখানা বন্ধের ঘটনায় পুরো শিল্পাঞ্চলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।