ড.প্রসেনজিৎ কর্মকার
কলকাতার শহরতলির এক সাধারণ মেয়ে — মীনা দত্ত।
কলেজে পড়ে, সংসারে অভাব, তবু মুখে সবসময় হাসি।
বাবা ছিলেন মেসেঞ্জার, কোভিডে চাকরি গেছে; মা সেলাই করে সংসার চালান।
মীনার স্বপ্ন — একদিন বড় ডাক্তার হবে, যাতে নিজের মতো অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারে।
সব ঠিকঠাক চলছিল, হঠাৎ একদিন জীবনে ঝড় এলো।
রাতে পড়ার টেবিলে বসে হঠাৎ মীনা শ্বাসকষ্টে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা গেল — তার ফুসফুসে বিরল সংক্রমণ, যার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী ও ব্যয়বহুল।
বাবা-মা অবাক, ভীত, অসহায়।
মায়ের চোখে জল, “মীনা বাঁচবে তো?”
ডাক্তার বললেন, “চিকিৎসা শুরু করতে হবে, তবে খরচ অনেক।”
কিন্তু মীনা হার মানেনি।
বিছানায় থেকেও ফোনে কলেজের ক্লাস করে, বন্ধুদের হাসায়, আর বলে —
“বাতাসের দিক বদলাতে পারে, কিন্তু আমি থামব না।”
তার এই সাহস দেখে বন্ধুরা, শিক্ষকরা একজোট হলো।
কলেজে শুরু হলো একটি উদ্যোগ —
“শ্বাসের দান নয়, জীবনের গান” নামে।
ছাত্রছাত্রীরা পোস্টার বানালো, অনলাইন ক্যাম্পেইন চালাল, নিজ হাতে তৈরি জিনিস বিক্রি করল।
অল্প অল্প করে জমা হলো চিকিৎসার খরচ।
কয়েক মাস পর মীনা সুস্থ হলো।
আজ সে হুইলচেয়ারে বসে কলেজে আসে, বক্তৃতা দেয় —
“আমি শ্বাস নিতে পারি আজ, কারণ তোমরা আমাকে বাতাস দিয়েছো।
জীবনে টাকা দিয়ে সব কিছু মাপা যায় না, কিছু জিনিস থাকে—
যা হৃদয় থেকে আসে।”
তার কথায় করতালিতে ফেটে পড়ে অডিটোরিয়াম।
শিক্ষকরা বলেন, “মীনা আমাদের শিখিয়েছে—
দুর্বল শরীর নয়, দুর্বল মনই আসল প্রতিবন্ধকতা।”