কলমেঃ ফরহাদ কাদির
বাবার হাত ধরে পৃথিবী চেনা
বাবার হাত ধরে প্রকৃতি দেখা
দোয়েলের সকাল ভোরের মসজিদে যাওয়া
ফাল্গুন চৈত্র দহন আগুনে সংগ্রামী মিছিল করা
বাবার হাত ধরে হেমন্তের ক্ষেত সোনালী ফসল দেখা
জীবনে চলার পথে
সুখ হাসি কান্না শ্রাবণ বৃষ্টিতে ভেজা
বাবার দুচোখে আমার নতুন নতুন স্বপ্ন বোনা
বাবা আমার জীবনে একগুচ্ছ গোলাপের ঘ্রাণ
রোদ্রের ঠিকানা বৃষ্টির আলপনা শিল্পীর ছবি আঁকা সময়
বাবার কাছ থেকে উত্তাল জলে সাঁতার কাটা ভর দুপুরে
বাবার চোখে জোসনার প্রজাপতি ধরা না বলা কথার মালা
বাবা আমার প্রচন্ড রোদে খাকি পোশাকে পাহারাদার ঘাটে
অনেক সুখের জন্য পলাশ শিমুলের রক্তমাখা হাসির বিল্পব
বাবার চোখে আমার আজন্ম রাত্রিদিনের গল্প নদীর ঢেউ
বাবার চেতনার বুকে বিপ্লবোত্তর বাংলার স্বাধীনতা
সাতচল্লিশ দেশভাগ
জন্মভূমি ছেড়ে না ফোঁটা আলোয় দেশান্তর
ঊনসত্তরের গণ আন্দোলন যে জলে আগুনজ্বলা জীবন
বাবা আমার পুরানো দিনের
দাদা হরকরাবাবু ছমিরউদ্দিন আর শাহাদাত পন্ডিতের
আকাঙ্খার বিপন্ন বিশ্বাসের বিনষ্ট ফসলের কান্না জোসনার
বাবা আমার ঘোর অন্ধকারে
প্রদীপ জ্বালানোর পরম সান্নিধ্যের বাতিঘর
মেদুয়া গ্রামের শরৎ সকালের পুরানো সাঁকো পার হওয়া দিন
বাবা আমার শিশু থেকে যিশুতে পরিনত করার স্বপ্ন সাধনা
এই সেই বাবা আমার
এখনো যার হাতে পানের বাটা নুরানী জর্দ্দা তামাক খাওয়া
জীবনের পথে আজান শুনে নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়া
বাবা আমার মেঝ রহমানের জন্য একগুচ্ছ সময় অপেক্ষা করা
ক্লান্ত সূর্যের অপরাহ্ন ডুবে যাওয়া মুহূর্ত
আজও বাবার বয়সটা নিয়ে লোকমুখে বিতর্কের জন্ম দেওয়া
বাবা আমার হঠাৎ সাদা মেঘের আকাশ
মুহূর্তের মধ্যে প্রচন্ড বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার তান্ডব
তবুও বাবা আমার
জীবনের পথচলা শ্রাবণ ভাদ্র কার্তিকে হেমন্তে দীঘল কবিতা।