
স্টাফ রিপোর্টার:
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত ছাড়া অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনরে জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এ সময় জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি, নির্বাচন ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন জাতীয় জীবনে এখন মুখ্য দাবি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনতিবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এই সনদ বাস্তবায়নে গড়িমসি না করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, কল্যাণকর রাষ্ট্র হচ্ছে ওই রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রের নাগরিকের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণ সুযোগ দিলে জামায়াতে ইসলামী জাতিকে একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র উপহার দেবে।
জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নেতৃত্বের প্রয়োজন। দুর্নীতিগ্রস্ত, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজদের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব হবে না। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, নির্বাচন ও কল্যাণ রাষ্ট্র’ গঠনের দাবিতে ওই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় ঐক্য জোট। সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ্ব মাওলানা
আলতাফ হোসাইন মোল্লার সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান জাতীয় ঐক্য জোটের মুখপাত্র মাসুদ হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন,বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পাটি সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল হক, ইসলামিক বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী, আগ্রাসন প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক আন্দোলনের আহ্বায়ক মাওলানা শওকত আমিন, অন্যানদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ঐক্য জোটের প্যানেল প্রধান সমন্বয়কারী সাখাওয়াত হোসেন শুভ, জাতীয় ঐক্য জোটের মিডিয়া সমন্বয়কারী সিদ্দিকুর রহমান, জনতার কথাবলে এর সভাপতি মুহাম্মদ নাঈম হাসান,ইসলামী জনতা পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা আজহারুল ইসলাম, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ পার্টির চেয়ারম্যান মাওলনা শরীফ হাজারী, ইসলামী সমাজতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ ভাসানী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পেশাজীবী পরিষদের প্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সমাবেশের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ না হলে সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা যাবে না। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশও তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনও সম্ভব নয়।
ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত এই সংসদ সদস্য প্রার্থী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি অনুগত থাকায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
তবে এর আগে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলেও এখনো সরকার সনদ বাস্তবায়নের উপায় স্পষ্ট করেনি এবং আদেশ জারি করতে পারেনি। এ সময় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গড়িমসির কারণ জাতির সামনে স্পষ্ট করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।