লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক "তুলসি গ্যাবার্ড" বলেছেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর দেশের টাকা বিদেশে বিনিয়োগ করতে চায় না কোন দেশের সরকার পতনের জন্য!" তিনি ফাঁস করলেন এক ভয়াবহ সত্য, "দেশে দেশে রক্ত ঝরাতে ডলার খরচ করেছে বিগত সময়ে সে-সব দেশের সরকার পরিবর্তনে যা ডোনাল্ড ট্রাম্প চান না! " তথ্য - যায়যায় দিন!"
এমন কথায় ইচ্ছে হয় "তুলসি" কে নিয়ে বলড্যান্স করি, ঢোলের তালে নাচি বা মাভৈ মাভৈ করে জনগন নিয়ে রোডে মিছিল করি!
আসলে তুলসি যা বলেছেন তা কি "মার্কিন পলিসি মেকার " ডিপ স্টেট পলিসি না-কি ট্রাম্প যে সারা বিশ্বে হানাহানির বাধায় ফেলেছেন তার থেকে জনগনের দৃষ্টি সরিয়ে অন্য দিকে নেয়া না-কি পরবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে তুলসি গ্যাবার্টের নমিনেশন নিয়ে আবার দল কে ক্ষমতায় নিয়ে আসার চেষ্টা!
সাত কুড়ি ইদুর মেরে বিড়াল হজ্জে গেলে সে বিড়াল সাধু হয়ে যায় না! মানুষ চায় তার পরিবারে একজন সৎ মানবতা মনুষ্যত্ব তাকওয়া পূর্ণ জীবনের একজন মুরব্বি! একই ভাবে সমাজ মোড়ল রাস্ট্রের সরকার প্রধান বা বিশ্বের বৃহৎ শক্তিকে জনহিতৈষী দেখতে চায়!
১৯৭১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট "নিক্সন" যদি পাকিস্তানের ইয়াহিয়া ভুট্টো কে বলতেন, "সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোট প্রাপ্ত কে" ক্ষমতা দিয়ে দাও, এইটাই গনতন্ত্র! কানে কানে বলতেন,"দেখো বাংলার মুজিব ২/৩ বছরে জনগনের আস্হা হারাবে!
প্রিয় পাঠক, পাকিস্তান অখণ্ড থাকতো, তিরিশ লক্ষ বাঙালির জীবন দিতে হতো না, চার লাখ মা-বোনকে ধর্ষিত হতে হতো না, একপক্ষ হতভাগা জারজ সন্তান বাংলায় জন্ম নিয়ে প্রবাসে দত্তক যেতে হতো না!
এমনি সারাবিশ্বে কোন মহৎ কাজের উদারন আমেরিকা সৃষ্টি করে নাই। সারা বিশ্বের গনতন্ত্র হত্যা করে সামরিক সরকার বসানো ছিলো আশি-নব্বইয়ের দশকে মার্কিন প্রধান পলিসি!
১৯৭৩ এ চিলির আলেন্দে হত্যা, মুজিব হত্যা, ইন্দোনেশিয়া, বার্মা, এই সেদিন পাকিস্তানের ইমরান খান কে তাড়ানো, একই সময় শ্রীলঙ্কার রাজা কাপাস, পরবর্তী তে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ, বাংলাদেশের শেখ হাসিনা , তার আগে তুরস্কের এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক ক্যু, এরদোয়ানের পরবতী নির্বাচনে মার্কিন বিরোধী প্রার্থী দিয়ে এক বিলিয়ন খরচ, ভারতের মোদিকে ফেলতেও মার্কিন বিনিয়োগ, আর-ও আগে ভিয়েতনামে ফ্রান্স বছর তিন হত্যা লীলা চালায় ব্যর্থ হলে আমেরিকা নিজে উনিশ-বিশ বছরে বিশ লাখ মানুষ মেরে পালায়, আফগান, ইরাক, কম্বোডিয়া, কোরিয়া মার্কিন হত্যা কোথায় হয় নাই?
আজ-ও সাতাত্তর বছর ধরে ফিলিস্তিন লাশ রাজনৈতিক কড়াইতে সেকে মার্কিন পোষ্য পুত্র ইসরায়েলের নাস্তা হয়! ইরান কে শায়েস্তা করতে নাবালকের মত ইসরায়েলের সাথে আমেরিকা নিজেই ইরানে যুদ্ধ করে! তেল সমৃদ্ধ দেশ ভেনিজুয়েলার তিন কোটি নারী পুরুষ নির্ঘুম রাত কাটে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজ দে-শ টাকে ঘিরে রেখেছে!
ইউক্রেন টার অস্তিত্ব মুছে যাওয়ার পথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূট কৌশলে যুদ্ধ তৈরি করে দেয়া!
বিশ্বে আটশো সামরিক ঘাটি থাকার পরেও বাংলাদেশে আরও একটা ঘাটি প্রয়োজন, সে কারনে উনত্রিশ মিলিয়ন বিনিয়োগ বাংলাদেশে, সরকার পতন ঘটায়ে সামরিক রণতরী (ডেস্ট্রয়ার) মোতায়েন কুতুবদিয়া বা তার আশেপাশে! বিশ্বের মানুষ তিন বেলা ভাত খেতে পাক এবং শান্তিতে থাকুক তা আমেরিকান নীতিতে কোনদিন ছিলো না,
আজ-ও নাই! আমেরিকার অর্থনীতি হচ্ছে WAR ECONOMY! সারা বিশ্ব যুদ্ধে থাকলে তাদের অস্ত্র বিক্রি বাজার ভালো থাকে!
তুলসি গ্যাবার্ট কে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, ফিলিস্তিন কে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিতে ১৬৩ দেশ একমত, সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েও আমেরিকা বাঁধা কেন? কেন পাকিস্তান সৌদি আরব WAR PACT করালেন? ভারত কে ভয় দিতে? আবার ভারত কে ঘুষ দিলেন কেন জাতিসংঘের স্হায়ী সদস্য করে, ভেটো পাওয়ার দিয়ে? আবার ভারতের সাথে AMERICA INDIA WAR PACT কেন করলেন, ভারত চীন রাশিয়া ইরান WAR PACT দেখে ভয় পেয়ে নাকি অন্য কোন নতুন পথে হাটতে! CONTRADICTORY
পলিসি নিলে মানুষ বুঝে ফেলে "ডাল মে কুছ কালা হ্যায়!" বাংলাদেশের অস্থিরতা কেন বন্ধ করেন না?
আপনারা যদি "দধীচি মুণি" বা "ভৃগু ঋষি" (যিনি ভগবান বিষ্ণু কে লাথি মেরেছিলেন) হয়ে থাকেন, তা হলে বাংলাদেশ টায় অন্তত দুধের নহর বা মধুর ঝর্ণা বহায় দিন হে মার্কিন মুণিবর!
জানি সবই আপনাদের কুটচাল, গরীব দেশগুলোর জনগণের রক্তপান আপনাদের স্বভাব! সিরিয়ার "বাসার" শাসক হিসাবে এত খারাপ, মানবতা নাই গনতন্ত্র ছিলো না বলে ২০১৪ সাল থেকে স্ব সশস্ত্র যুদ্ধ চালালেন আপনার পৌষ্যপুত্রের মাধ্যমে! ২০২৪ সালে এসে বাশার কে তাড়ালেন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধ হলো কই? দেশটার ৪০% জায়গা তো ইসরায়েল দখল করে নিয়েছে। উঁকি দিতে সুবিধা হয়েছে লেবাননের রান্না ঘরে! আপনারা যাদের বন্ধু হয়েছেন তাদের আর দ্বিতীয় শত্রুর দরকার হয় নাই! অতএব, বিড়াল হজ্ব করলে-ও পূতপবিত্র হয় না, ইঁদুর পেলেই চিবিয়ে খায়!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।