
রাস্না হিমেল, ঢাকা
গত শনিবার জাতীয় ঐক্য জোটের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অর্গানাইজিং কমিটির সভায় জোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই আগস্ট এর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন কে প্রশ্নবিদ্ধ করে ভবিষ্যতে আন্দোলনে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ভারত ও তাদের এদেশীয় দোসর্রাব তারাই পরিকল্পিতভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও তাদের কার্যক্রম কে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ৫ই আগস্ট থেকে ৮ই আগস্ট পর্যন্ত দেশে কার্যত কোন সরকার ছিল না। ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে সংসদের ৩০০ আসনের এমপি-মন্ত্রিসহ এমনকি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব পলায়নের পর কার্যত সংবিধানের কোন কার্যক্রম থাকে না। এ অবস্থায় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারত। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভারতীয় আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী ও পরাজিত শক্তির কিছু দালাল ঘাপটি মেরে বিরোধী শিবিরে থাকা কিছু নেতাদের কারণে বিপ্লবী সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে বিপ্লবী চেতনায় পরবর্তীতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় অকার্যকর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের কিছু অনুলিপির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের রেফারান্ডামের মাধ্যমে আপৎকালীন সময় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। যেহেতু সংবিধানে বলা আছে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত হবে সেহেতু এই সরকার বর্তমান সংবিধানের আলোকে বৈধ না। সরকার যদি বৈধ না হয় তাহলে তার সকল কার্যক্রম অবৈধ হবে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন হবে ২০২৯ সালের জানুয়ারি মাসে। এর আগে সরকার যদি জাতীয় নির্বাচন দেয় তাহলে সেই নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে বৈধ হবে না। সরকার যদি ২০২৬ সালে জাতীয় নির্বাচন করতে চায় তাহলে দ্রুত সরকারের বৈধতার প্রশ্নে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন নিয়ে তাদের বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে আগামী দিনে ক্ষমতার পটভূমি পরিবর্তনে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতৃবৃন্দ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এজন্য জাতীয় ঐক্য জোটের নেতৃবৃন্দ দ্রুত গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারের বৈধতা নিশ্চিত করার জন্য জোর দাবি জানান।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামীতে গণভোটের দাবি আদায়ে জাতীয় ঐক্যজোটের উদ্যোগে দেশের সর্বস্তরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দদেরকে নিয়ে গোলটেবিল আলোচনা সভা ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তরগেট থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গনমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ঐক্য জোটের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদীর সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান জাতীয় ঐক্য জোটের মুখপাত্র মাসুদ হোসেনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐক্য জোটের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ্ব মাওলানা আলতাফ হোসাইন মোল্লা, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ওবায়দুল হক, বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টির মহাসচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জাতীয় ঐক্য জোটের নেতা তাইফুর রহমান রাহি, ইমরান হোসেন ইমন প্রমুখ জাতীয় নেতৃবৃন্দ।