
বৃষ্টি
ঝরে ঝরে ঝর্ ঝর্ ধারা,
অশ্রুর মতো স্নিগ্ধ তারা,
মেঘের ডাকে বাজে গান—
ভিজে ওঠে অশান্ত প্রাণ।
তটিনীর ঢেউ দুলে যায়,
পল্লব ভিজে ছায়া ছায়া,
মাটির গন্ধ জাগে হঠাৎ,
মনে ভেসে ওঠে প্রভাত।
শিশুরা নাচে ভিজে ঘাসে,
চঞ্চল হাওয়ার খেলার পাশে,
কৃষকের মুখে হাসি ফুটে—
ধানের ক্ষেতে জল ঢুকে।
আকাশ জুড়ে রঙের খেলা,
বজ্রের সুরে ভেসে মেলা,
জীবন স্নিগ্ধ হয় যে তাতে,
বৃষ্টি মেশে ভালোবাসাতে।
দিগন্ত জুড়ে নাচে আলো,
বিদ্যুৎ-এর ঝলক যেন ভালো,
অন্ধকারের বুক ভেদ করে
নতুন আশা আসে ঘরে।
ভিজে গলির পথের ধারে,
ভালোবাসা ছোঁয়া তারে,
বৃষ্টিধারার স্নিগ্ধ সুরে
প্রাণ মিশে যায় অনন্ত নূরে।
স্বপ্নজাল কবি
আমি বুনি শব্দের জাল,
স্বপ্নের রঙে রঙিন সকাল।
ছন্দের স্রোতে ভাসাই মন,
প্রাণে জ্বলে কবিতার প্রদীপগণ।
আমার কলম আঁকে আলো,
অন্ধকারে ফোটায় ভালো।
বেদনার ভাঁজে রাখি গান,
অশ্রুর ভিতর জাগাই প্রাণ।
আমি নুপুর—শব্দের রায়,
স্বপ্নজালে বুনি পরিচয়।
কবিতার ডানায় উড়ি নির্ভীক,
আমার নামেই জাগে সঙ্গীত।
স্বপ্নে বাঁধি আলোর পথ,
কণ্ঠে জ্বলি বিদ্রোহ-শপথ।
যতদিন বাজে ধ্বনি-তরী,
“নুপুর রায়—স্বপ্নজাল কবি।”
তোমায় ঘিরে সাজাবো স্বপন
দুচোখ ভরা মায়া আমার
মনে আছে আশা,
তোমায় ঘিরে সাজাবো সখি
স্বপ্নরঙের বাসা।
ঝড় হাওয়ায় ভাঙবে না গো
আমার ছোট ঘর,
তোমায় নিয়ে থাকবো সেথায়
আজন্মদিন পর।
কথা দাও গো প্রাণের সাথী
যাবে না তো ছেড়ে,
তুমি ছাড়া শুন্য বুকের
প্রাণপাখি যায় উড়ে।
জানি নারে কেন তুমি
হৃদয়েতে আপন,
তোমায় হারাবার ভয়েতে
মনে জাগে কাঁপন।
তবু যদি যাও হারিয়ে
আমায় একলা করে,
প্রেমের শিখা জ্বলে উঠবে
সাধের কুঁড়ে ঘরে।
তখন হয়তো পড়ে রবে
আমার নীথর দেহ,
পথিক ছাড়া কেহ নাহি
দেখবে তখন কেহ।
তবু তোমায় দোষ দেবো না
প্রাণের মাঝে রবে,
মনের বেদনায় বিদায় নেব
শান্তি পাবো তবু।
শীতের পিঠা
শীতের শেষে কুয়াশা যখন
সরে যায় একটু দূর,
খেজুর গুড়ের গন্ধ তখন
পাক করে মনের সুর।
আঙিনাতে সব পিঠা হয় তৈরি,
মা-দিদিরা জোটে পাড়ে,
ভাপা পুলি আর চিতইয়ের বড়ি
খেতে চায় বারে বারে।
গরম পিঠাটি মুখে যেই পড়ে
জুড়িয়ে যায় সেথা প্রাণ,
রসে ডুবিয়ে খেলে মজা করে
গাই শুধু খুশির গান।
কাক পক্ষী সব আসে উঁকি মেরে
চায় যদি একটুখানি,
সবার তরে তাই পিঠা দেবো বেড়ে
শীতকালের এই শনি।