
লেখক: পূজা শীল
ইন্টারনেট হলো পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশাল যোগাযোগব্যবস্থা। এটি ১৯৬৯ সালে চালু হয় এবং এর জনক হলেন ভিন্টন জি. কার্ফ। প্রথমে ইন্টারনেটের গতি ছিল খুব ধীর, কিন্তু বর্তমানে এটি আমাদের হাতের মুঠোয় পৃথিবীকে এনে দিয়েছে। একে বলা যায় “নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক।” বর্তমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, বিনোদনসহ জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট আমাদের সহায়ক। আগে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে ছিলাম, কিন্তু ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার আমাদের জীবনকে আরও আধুনিক ও সহজ করে তুলেছে।একসময় মানুষ দূরবর্তী আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারত না, কিন্তু এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে মুহূর্তেই যোগাযোগ করা সম্ভব। বিপদের সময়ও ইন্টারনেট আমাদের পাশে থেকেছে। উদাহরণস্বরূপ, করোনা মহামারির সময় আমরা ঘরে বসে খাবার অর্ডার করা, টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ, অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ সবই করতে পেরেছি ইন্টারনেটের সাহায্যে। যখনই কোনো বিষয়ে অজানা থেকে যাই, ইন্টারনেট মুহূর্তেই তার সমাধান দেয়। অর্থাৎ, জ্ঞান আহরণকে করেছে আরও সহজ ও দ্রুত।তবে প্রত্যেকটি বিষয়ের যেমন সুফল আছে, তেমনি কুফলও রয়েছে। ইন্টারনেটেরও উভয় দিক রয়েছে। কেউ ইন্টারনেটকে জ্ঞান ও তথ্য আহরণের কাজে ব্যবহার করছে, আবার কেউ অপব্যবহার করছে। বিশেষ করে অনেক তরুণ-তরুণী নকল অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা, বিভ্রান্তি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। অল্প বয়সী অনেক শিক্ষার্থী ইন্টারনেট আসক্তিতে পড়ে পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, ফলে শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে অনেকেই বাস্তব জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এমনকি দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়া, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদিও বাড়ছে। আগে যখন ইন্টারনেট ছিল না, তখন শিশুরা স্বপ্ন দেখত শিক্ষক, চিকিৎসক, পুলিশ বা ব্যারিস্টার হওয়ার। কিন্তু এখন অনেকেই বলে “আমি বড় হয়ে টিকটক সেলিব্রিটি, ইনফ্লুয়েন্সার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে চাই।”অতএব, ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহার কখনোই ভালো নয়। এটি না সম্পূর্ণ ভালো, না সম্পূর্ণ খারাপ এর ব্যবহার নির্ভর করে ব্যবহারকারীর উপর। তাই আমাদের উচিত ইন্টারনেটের সঠিক ও সীমিত ব্যবহার করা।আমি চারুকলা পড়ার উদ্দেশ্যে খুলনা আর্ট একাডেমিতে আসার পর যেটুকু জানলাম, তা তুলে ধরতে চাই। এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের অন্যতম কারণ হল, চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস স্যার শুধুমাত্র বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষা দেন না, বরং একজন আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। খুলনা আর্ট একাডেমি বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে, এবং স্যারের নেতৃত্বে আমাদের অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে।আমাদের শ্রদ্ধেয় মিলন বিশ্বাস স্যারের অনুমতিতে আজ আমি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুফল ও কুফল সম্পর্কে লিখছি। স্যারের কাছ থেকে আমি যে অল্প দিনে শিক্ষা গ্রহণ করেছি, আজ সেই শিক্ষা হৃদয়ে ধারণ করে এই লেখাটি লিখতে সক্ষম হয়েছি। স্যার নবীন চারুশিল্পীদের পথপ্রদর্শক হিসেবে স্মারক গ্রহণ করেছেন এবং শিল্পী গড়ার কারিগর হিসেবে সম্মাননা লাভ করেছেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত যে আমি এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পেরেছি।শেষে বলতে চাই, আমার এই লেখার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস স্যার। খুলনা আর্ট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এই মহান শিক্ষক আমাকে লিখতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং অনুমতি দিয়েছেন এই লেখাটি প্রকাশের জন্য। তাঁর প্রতি জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।আমাদের আশীর্বাদ করুন, যাতে আমরা সবার ভালোবাসা এবং শিক্ষার মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি এবং খুলনা আর্ট একাডেমিকে বিশ্বব্যাপী সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারি।
লেখক পরিচিতি
নাম: পূজা শীল
শিক্ষার্থী: খুলনা আর্ট একাডেমির চারুকলা ভর্তি কোচিং ২০২৫
ব্যাচ: ১৬তম
রোল: ০৩