
মোঃ রায়হান পারভেজ নয়ন
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
নীলফামারীর জলঢাকায় বাজারে আলুর দাম স্থিতিশীল না থাকলেও আগাম জাতের আলুর চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। লোকসানের শঙ্কা মাথায় নিয়েই তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে জমিতে কাজ করে যাচ্ছেন। গত মৌসুমে দাম কমে ক্ষতির মুখে পড়লেও এবার সেই ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় আগের চেয়ে আরও বেশি যত্ন নিয়ে আলুর পরিচর্যায় মনোযোগ দিয়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর জলঢাকায় প্রায় ৪২০ হেক্টর উঁচু জমিতে গ্রানুলা, সেভেনসহ বিভিন্ন জাতের আগাম আলুর চাষ হয়েছে। এছাড়া এলাকার দুটি হিমাগারে এখনো প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুদ রয়েছে। বর্তমানে বাজারে আলুর দাম কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে থাকায় নতুন আলুর দাম নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এক মাসের মধ্যেই মাঠে উঠবে আগাম আলু, তাই কী দাম পাওয়া যাবে—এ নিয়েই দুশ্চিন্তা চাষিদের।
মীরগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, “পাঁচ বিঘায় সেভেন জাতের আলু লাগিয়েছি। গতবার দাম না থাকায় বেশ ক্ষতি হয়েছে। এবার কী ভাগ্য নিয়ে আল্লাহ দিয়েছেন সেটাই দেখার অপেক্ষা।”
খুটামারা ইউনিয়নের কৃষক মাহাতাব আলী জানান, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি হাইব্রিড ধান কাটার পর আলু রোপণ করেছেন তারা। তার আশা, নভেম্বরের পনেরো দিনের মধ্যেই নতুন আলু তোলা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, “এ এলাকার আগাম আলু ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করি। কিন্তু এবার হিমাগারে পুরোনো আলু বেশি থাকায় দাম কেমন হবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।”
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিজানুর রহমান জানান, জলঢাকা অঞ্চলে আগাম আলু বেশ জনপ্রিয়। ফলন তুলনামূলক কম হলেও বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পেয়ে থাকেন। তবে এবার সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাজারে প্রভাব পড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, যেখানে পানি জমে না—সেসব উঁচু জমিই আগাম আলুর চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। সাধারণত ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই এ জাতের আলু ঘরে তোলা যায়।
কৃষকদের আশা—দাম যদিও অনিশ্চিত, তবুও পরিশ্রমের সঠিক মূল্য তারা পাবেন।