
যে মাটিতে ক্ষুধার্ত হাত রোপন করে বীজ,
সেই মাটিতেই জন্ম নেয় জীবনের কবিতা।
যে ঘামে ভিজে ধানক্ষেত সবুজ হয়,
সেই ঘামের দাম কেন পড়ে থাকে অবেলায়?
এই পৃথিবী কবে শিখবে –
ভাত কোনো দান নয়,
এটা মানুষের অধিকার,
এটা শ্রমের রক্তঝরা প্রতিদান।
যারা সারাদিন রোদে পুড়ে কাজ করে,
তারাই তো গড়ে তোলে সভ্যতার দেয়াল।
তবু কেন সেই দেয়ালের ছায়ায়-
তাদের কণ্ঠস্বর হারিয়ে যায় অন্ধকারে?
আর নয় নিরবতা-
আর নয় সহ্য করা অমানবিক ক্ষুধা,
আজ সময় এসেছে উঠে দাঁড়াবার
দরিদ্রের হাতে হাতে জেগে উঠুক এক স্লোগান-
যেখানে শব্দ হবে অস্ত্র,
আর মানবতা হবে বিপ্লবের গান।
আমরা চাই না দয়ার রুটি,
আমরা চাই না করুণার ভাত,
আমরা চাই সমান অধিকার।
যে অধিকার জন্মের সঙ্গে মিশে আছে,
এই মাটির গন্ধে, ঘামের স্বাদে-
আমাদের শিরায় বয়ে যাওয়া অন্নের রক্তে।
যে রাজপথে একদিন ক্ষুধার্ত শিশু-
খালি হাতে ভিক্ষা চেয়েছিল,
সেই রাজপথেই এখন বাজবে,
মানুষের জাগরণের ঢোল।
ব্যানারে লেখা থাকবে –
আমরা ভাত চাই, কিন্তু মাথা নত করে নয়।
ভালোবাসা মানে শুধু ফুলের গন্ধ নয়,
ভালোবাসা মানে ক্ষুধার্ত মুখে আহার তুলে দেওয়া।
মানুষ মানে কেবল নাম নয়,
মানুষ মানে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
আজ সময় এসেছে কলমকে তলোয়ার বানানোর,
চুপ থাকা চোখকে আগুনে পরিণত করার।
কারণ ক্ষুধা কোন লজ্জা নয়-
লজ্জা হলো সেই নিরবতা,
যেখানে আমরা দেখি তবু চুপ থাকি।
আসো, আজ আমরা একসাথে বলি –
এই পৃথিবী হবে সবার,
এখানে কোন পেট খালি থাকবে না।
কোন মা আর অর্ধেক ভাত,
লুকিয়ে রাখবে না ছেলের জন্য।
যেদিন এদেশের প্রতিটি শিশুর ঠোঁটে-
তৃপ্তির হাসি ফুটবে,
যে দিন প্রতিটি মানুষের চোখে
মানবতার দীপ্তি জ্বলবে,
সেই দিন সূর্য উঠবে –
সত্যিকার স্বাধীনতার আলো নিয়ে।
আর তখন কবিতা লেখা হবে –
ভালোবাসার আর মানুষের জয়ের ভাষায়।