
পছন্দের মানুষ
জীবনে থাকা চাই এক এমন প্রিয়জন,
প্রেম না হোক, শুধু মনের বাঁধন।
সে থাকুক পাশে, গোপনে বা দূরে,
আলো দেয় সে তো হৃদয় জুড়ে।
হঠাৎ যখন সব লাগে বিদ্ধস্ত,
স্মরণে তারে হাসি পেয়ে, মন হয় প্রশান্ত।
ছবিতে তার মুখখানি দেয় মানসিক শান্তি,
ব্যস্ত দিনে আনে এক মায়ার ক্লান্তি।
সে থাকুক সুখে, সে থাকুক শান্তিতে,
আমার জীবনে সে থাক নিত্য-ভ্রান্তিতে।
এইটুকু চাওয়া শুধু, এই মিনতি সার,
প্রিয়জনের স্পর্শে ভরে উঠুক চঞ্চল প্রাণ!
প্রেম তো আসে না জেনে, লাগে না সাহস,
শুধু একজন ‘পছন্দের মানুষ’ বাঁধে হৃদয়ে বাসা!
হোক সে বন্ধু, বা হোক কোনো আশা,
এইটুকু উপস্থিতি বড় ভালোবাসা।
শীতের গল্প
কনকনে এই শীতের রাতে সবার ঘরে
কেমন করে কাটছে প্রহর, মন জানতে চায়।
ধনী-দরিদ্র সকল মানুষ একই দেশের,
আলো-আঁধারে জীবন ছবি, কেবলি ছুটে যায়।
গরম পোশাক, চাদর মুড়ি, উচ্চ অট্টালিকায়,
ধোঁওয়া ওঠা চায়ের কাপে সুখ, গল্পে দিন কাটায়।
শীতের পিঠা, পুলি-পায়েস, কতই আয়োজন,
শহরজুড়ে রঙিন মেলা, কতো প্রিয়জন।
অন্যদিকে নিরাশ্রয়ের কাঁপন ওঠে বুকে,
পুরোনো জীর্ণ কাঁথা পেতে থাকে পথের ধূলিকে।
আগুনের আঁচ পেলেও ক্ষণিক, আবার আঁধার নামে,
পেট ভরে যায় শুধু স্বপ্নে, নয়তো অন্য দামে।
ক্ষেতে মাঠে কৃষক হাসে, সোনা ফসল দেখে,
শিশির ভেজা ঘাস ফিসফিস করে তারই কথা লেখে।
সকালের ঐ নরম আলোয় খেঁজুর রস ঝরে,
সুখ-দুঃখের মিশ্রতাতেই শীতের বেলা ভরে।
এই জীবনে চলার পথে ভিন্ন সবার পথ,
তবুও একই শীতল ছোঁয়া, একই রথের রথ।
আসুক উষ্ণ ভালোবাসা, দূর হোক সব ভয়,
এই শীতে মানুষ বাঁচুক, এই আমাদের জয়।
বিজয় দিবস
রক্ত দিয়ে কেনা মোদের বিজয়-সোনা নাম।
বাঙালির ত্যাগে গাঁথা মুক্তিরই এ দাম॥
নয় মাস চলেছিল ভয়াবহ রণ,
লাখো প্রাণ করেছিল অকাতরে পণ।
স্বজন হারানো ব্যথা আঁকে বেদনার ছাপ,
মা-বোনের সজ্জা হানি পাপীদের সন্তাপ।
লাঞ্ছনা আর কষ্ট বুকে নিয়ে সবে,
স্বপ্ন বোনা হলো স্বাধীনতার রবে।
পরাধীনতার শিকল ভেঙে হলো ক্ষয়,
আসে সে শুভ দিন এলো মহাবিজয়।
রেসকোর্স মাঠে তাই মুক্তির নিশান,
হানাদার করে মাথা নত অপমান।
স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে করি গো স্মরণ,
শহীদেরা রেখেছে মোরা দেশের এ মরণ।
১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির গর্ব,
স্বাধীনতা-গানে মোরা এনেছি অপূর্ব।
প্রয়োজন-লাঠি
প্রয়োজন-লাঠি ধরে, চলে যে জীবন;
পাশে থাকে সে যে, করে সে পালন।
অন্ধের পথের, লাঠি সে যে হয়;
ভরসার কাঠি, দেয় সব নির্ভয়।
আলো যবে আসে, দূর হয় আঁধার;
প্রয়োজন শেষে, হয় লাঠি বার।
আগে ফেলে দেওয়া, নিয়ম জগতে;
উপকার ভোলে, যায় দ্রুত রথে।
স্বার্থপর এই, মানব-স্বভাব;
সম্পর্কে দেখি, এক সে অভাব।
দুঃসময়ে যারা, দেয় সে আশ্রয়;
সুসময়ে তারা, সবার তুচ্ছ হয়।
শ্রমিক সবাই
এই জগতে সবাই গো ভাই,
কে না করে কাজ?
পায় না ছুটি একটি দিনের,
সকাল কিংবা সাঁঝ।
ব্যক্তিগত চাহিদা মেটাতে,
থাকে কত আশা!
দিনের শেষে অর্থের লাগি,
ভুলছি ভালোবাসা।
কেবা শ্রমিক, কেবা মালিক,
শ্রেণি কেন আঁকা?
আসল কথা, অর্থ ছাড়া,
জীবন লাগে ফাঁকা।
কাজের ভালোমন্দ বিচার,
পারিপার্শ্বিক যা,
অর্থ আর প্রয়োজনই মূল,
এই জগতের হা!