
মোঃ রায়হান পারভেজ নয়ন
স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় এক হৃদয়বিদারক ও বিরল চিকিৎসা ঘটনার জন্ম দিয়েছে গভীর আলোড়ন। স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক শরীরে দুই মাথাবিশিষ্ট এক নবজাতকের জন্ম হয়। তবে জন্মের কিছুক্ষণের মধ্যেই শারীরিক জটিলতায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রসববেদনা নিয়ে পল্লবী রানী নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ডোমার শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরুরি সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে নবজাতকের গঠনে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। শিশুটির একটি শরীর থাকলেও দুটি আলাদা মাথা ছিল।
জন্মের পরপরই নবজাতকটি তীব্র শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়। চিকিৎসক ও নার্সরা দ্রুত জরুরি চিকিৎসা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ শুরু করলেও শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে জন্মের প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যেই শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।
চিকিৎসকদের মতে, গর্ভাবস্থার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রূণের স্বাভাবিক বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে এ ধরনের কনজয়েনড শিশুর জন্ম হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব নবজাতকের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জটিলভাবে যুক্ত থাকায় জন্মের পর টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় নবজাতকের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সন্তান হারানোর বেদনায় পরিবারটির সদস্যরা ভেঙে পড়েন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাজুড়েও ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আবেগের সৃষ্টি হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি একটি স্বাভাবিক কিন্তু অত্যন্ত বিরল জটিলতা। চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অবহেলা ছিল না বলে তারা দাবি করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি সত্ত্বেও প্রকৃতির কিছু রহস্য আজও মানুষের অজানা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে।