রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
পাশে থাকলেই সবাই আপন হয় না সখ করে স্বাধীনতা হারায় আহম্মক! মোরেলগঞ্জে ইংরেজ নীলকুঠি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ইতিহাস-ঐতিহ্যের বেদনাবহ ধ্বংসস্মৃতি কবিতাঃ গাঁয়ের জীবনকথা জগন্নাথপুরে এডভোকেট ইয়াসীন খানের সমর্থনে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে জামায়াতের উঠান বৈঠক প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া প্রেসক্লাব এর অফিস উদ্বোধন মাটি – মা প্রফেসর ডক্টর সন্দীপক মল্লিক সাহিত্য রসগ্রহণ অনুষ্ঠানে নতুনতারা’র প্রতিষ্ঠাতা সংবর্ধিত সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দ্বীপশিখা পদক পেলেন জগন্নাথপুরের কৃতি সন্তান শাহিনুর রহমান কারো কাছে নিজের সমস্যা বলার আগেই ভাবুন

কবিতাঃ সবুজপুর

Coder Boss
  • Update Time : শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৮৩ Time View

কলমেঃ মুহিতুল ইসলাম মুন্না

অনেক দিন আগে, বাংলাদেশের এক কোণে ছিলো ছোট্ট একটি গ্রাম, নাম সবুজপুর। গ্রামটি প্রকৃতির কোলে লুকিয়ে ছিলো। চারপাশে ছিলো ঘন সবুজ গাছপালা, টলটলে নদী, ছোট ছোট পাহাড় আর নানান রকম পাখির কলকাকলি। গ্রামের মানুষজন খুব শান্তিপ্রিয় আর প্রকৃতিপ্রেমী ছিল। তারা গাছ লাগাতো, নদী পরিষ্কার রাখতো, পাহাড়-টিলা অক্ষুণ্ণ রাখতো।

গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ হাকিম চাচা সবসময় বলতেন, — “প্রকৃতি আমাদের মায়ের মতো। প্রকৃতির যত্ন নিলে সে আমাদের সুখ, শান্তি আর খাদ্য দান করে। আল্লাহ তাআলা এই প্রকৃতিকে আমাদের জন্য নিয়ামত করেছেন। এই নিয়ামতের যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব।”

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের কিছু মানুষ লোভী হয়ে উঠলো। তারা বন থেকে গাছ কাটতে লাগলো, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করতে শুরু করলো। নদীর পাশে কারখানা গড়ে তুলে বিষাক্ত আবর্জনা ফেলা শুরু করলো।

এতে গ্রামটা বদলে যেতে লাগলো। গাছ কমে যাওয়ায় পাখিরা পালিয়ে গেলো, হরিণ, খরগোশ, শেয়াল আর নানান প্রাণী নিরাপদ আশ্রয় হারিয়ে লোকালয়ে আসতে শুরু করলো। নদীর পানি শুকিয়ে কাঁদায় পরিণত হলো। গরম বেড়ে গেলো, শীত কমে গেলো। মানুষ আর গরু-ছাগলরা খাবার আর ঠান্ডা ছায়া খুঁজে পেতো না।

এই অবস্থায় একদিন গ্রামের মসজিদের ইমাম সাহেব সবাইকে ডেকে বললেন, — “আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, ‘আমি ভূমি ও তার উপর সবকিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা নাযিয়াত)। আর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘গাছ লাগানো সদকা। কোনো প্রাণী যদি তাতে আশ্রয় নেয় বা খায়, তবে তাও সওয়াব।’ তাই আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে।”

হাকিম চাচা, ইমাম সাহেব আর গ্রামের কিছু সচেতন যুবক মিলে সবাইকে বোঝাতে লাগলেন। একদিন গ্রামের ছোট্ট মেয়ে আয়েশা বললো, — “আমি প্রতিদিন একট করে গাছ লাগাবো। তোমরাও কি লাগাবে?”

ওর কথায় সবাই অনুপ্রাণিত হলো। গ্রামে আবার গাছ লাগানো শুরু হলো। সবাই মিলে নদী পরিষ্কার করলো। কারখানার আবর্জনা ফেলা বন্ধ হলো। পাহাড়-টিলা কাটাও বন্ধ করে দিলো।

বছর খানেকের মধ্যেই সবুজপুর ফিরে পেলো তার পুরনো রূপ। পাখিরা ফিরে এলো, নদী আবার টলমলে জলে ভরে উঠলো। শিশুরা ছায়ায় খেলা করতে পারলো।

সবুজপুরের মানুষ শিখলো — “পরিবেশ বাঁচলে আমরা বাঁচব। প্রকৃতির যত্ন নিলে প্রকৃতি আমাদের ভালো রাখে।”

গল্পের শিক্ষা:
পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। গাছপালা, পাহাড়-নদী আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত। এগুলোর যত্ন না নিলে প্রকৃতি অসন্তুষ্ট হয়, আর তাতে আমাদেরই ক্ষতি হয়। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট হওয়াই মানবিক ও ইসলামী দায়িত্ব।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102