রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

সবুজ মুন্সীর পদত্যাগ উল্টো অব্যহতির নাটক আটাব কমিটির, আটাব সভাপতি-মহাসচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১২ Time View

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী। তবে এ ঘটনায় উল্টো অব্যহতির নাটক সাজিয়েছে আটাব কমিটি। সংগঠনটির এধরনের অপকর্মে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নানা মহলে।
জানা গেছে, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস এর স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী। একইসঙ্গে গত ২৪ এপ্রিল সংগঠনটির কার্য নির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। তিনি নিজ প্রতিষ্ঠান নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের প্যাডে পদত্যাগের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, আটাব কমিটির স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম উল্লেখপূর্বক সাধারণ সদস্যদের কর্তৃক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় বিব্রতবোধ করছেন।
চিঠিতে সবুজ উল্লেখ করেন, আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসিজ ও সায়মন হলিডেজের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটাবের বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা।
প্রশাসক নিয়োগ ইস্যুতে আটাব নেতৃত্বকে শোকজ করেছে মন্ত্রণালয়: প্রশাসক নিয়োগ ইস্যুতে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সভাপতি ও মহাসচিবকে শোকজ (কারণ দর্শানো নোটিশ) দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তাহসিনা বেগম সই করা এক নোটিশে এ আদেশ দেওয়া হয়। এরপর সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস’র স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গত মঙ্গলবার আটাব সভাপতি ও মহাসচিবকে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস্ অব বাংলাদেশ (আটাব) এর পরিচালনা পর্ষদ বাতিলপূর্বক প্রশাসক নিয়োগের আবেদন পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায়, আটাব এ বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭ ধারা মোতাবেক কেন প্রশাসক নিয়োগ করা হবে না, পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে আটাব সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলে ধরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা’র মহাপরিচালক, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল’র মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসীজ ও সায়মন হলিডেজ’র মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এয়ার স্পীড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ভিন্ন ভিন্ন চেক ইস্যু করে মোট ৯৭ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং মহা সচিব মিসেস আফসিয়া জান্নাত সালেহ এর মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান সায়মন ওভারসীজ লিমিটেডের নামে মোট ৭৭ লাখ ২১ হাজার ১১৭ টাকার চেক ইস্যু করে আত্মসাৎ করে। এছাড়াও বিভিন্ন জাল ইনভয়েস এর মাধ্যমে আটাবের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচন ও আটাব মেলাসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে যার স্বপক্ষে কোন বিল বা ইনভয়েস জমা দেওয়া হয়নি। বিগত ২০১৮ সাল থেকে আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এমিরেটস হলিডেজের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা ফি ও প্যাকেজের টাকা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে আরব আমিরাতে পাচার করছে। এছাড়াও বিভিন্ন অফিসের টাকা তারা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে থাকে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কোনো উপায় না পেয়ে ২দিন পর মিথ্যা অভিযোগ তুলেন আটাব সভাপতি ও মহাসচিব। এরপর গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আটাব কার্যনির্বাহী কমিটির ৬ষ্ঠ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে আটাবের কার্যনির্বাহী কমিটি, সকল স্ট্যান্ডিং কমিটি ও অন্যান্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অথচ এরআগেই গত ২৪ এপ্রিল সংগঠনটির কার্য নির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন সবুজ মুন্সী। এতেই সুস্পষ্টভাবে আটাব নেতৃদ্বয়ের মিথ্যাচার প্রমানিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট্ররা। শুধু তাই নয়, সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব নিজেদের বিরুদ্ধেই টিকেট সিন্ডিকেট, কালোবাজারী, যাত্রীর নাম ছাড়া টিকেট মজুতদারী,টিকেট সিন্ডিকেশন, নামবিহীন টিকেট বুকিং ও মজুতদারী, কৃত্রিম সংকট তৈরী ও চড়া দামে টিকেট বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। এখন উল্টো সবুজ মুন্সীর প্রতিষ্টানকে “লাইসেন্স কেন বাতিল হবেনা” মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে হাস্যোরস্যে পরিনত হয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। তবে এসব বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেও আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ কোনো বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102