বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
We Don’t Want War, We Wish for Peace কুড়িগ্রাম জেলা শহরে পানি ও জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পৌরবাসী নীলফামারীর সৈয়দপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান পাক ভারত যুদ্ধ ! ‘২০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা শেখ হেলাল-তন্ময়ের বিরুদ্ধে’ গ্রে’ফ’তা’র-০১ দিরাই পিএফজির পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে গুচ্ছ গ্রামের মানুষের যাতায়াত গজারিয়া নদী ইজারা না দেওয়ার দাবী জগন্নাথপুরের জগদীশপুর বড়খালের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পুনর্নির্মাণ জরুরি তোমার মূল্য তুমি জানো না সাপ্তাহিক আজকের জনকথা পত্রিকা নাগরিক নেতা এ্যাডভোকেট মোঃ বাবুল হাওলাদার এর হাতে তুলে দিলেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আহমেদ হোসাইন ছানু

মোংলা-খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেন লিজ দেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ৫ মে, ২০২৫
  • ১৫ Time View

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:

মংলা -খুলনা- বেনাপোল রুটে লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলাচলকারী বেনাপোল কমিউটার (বেতনা)ট্রেন বেসরকারি খাতে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান আয় থেকে বেশি পাওয়া যাবে অজুহাতে ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা। বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমিউটার ট্রেনটি লিজ নেওয়ার জন্য মহাপরিচালকের দপ্তরে দেনদরবার করছেন বলে ওই সূত্রটি জানায়। রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা-খুলনা-বেনাপোল ভায়া যশোর যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর এই রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। যা প্রায় ১১ বছর (২০১০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত) সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এরপর ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথমে বেসরকারি কোম্পানি ‘মেসার্স বান্না এন্টারপ্রাইজ’ ও পরে ‘ইসলাম শিপ বিল্ডার্স’ চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই ট্রেন পরিচালনা করে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীসেবার মান নিম্নমুখি হওয়ায় ও চোরাকারবারী টানাপার্টির দখলে চলে যাওয়ায় ২০১৩ সাল থেকে আবার সরকারি তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা হয়। লাভজনক ও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এ রুটে দিনে দুইবার যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতিদিন সকাল ছয়টায় খুলনা থেকে কমিউটার ট্রেন যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়ে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, যশোর, ঝিকরগাছা, নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে আটটায় বেনাপোল পৌঁছায়। এ সব  স্টেশন থেকে ওঠা বেশির ভাগ যাত্রী ভারতে যান। পরে সকাল নয়টা ১৫ মি: বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটে খুলনা পাশে  মোহাম্মদ নগর পৌঁছায় ট্রেনটি। এই ট্রেন আবার মোংলায় দুপুর ১২টা ৪৫ মিঃ পৌঁছায়। মোংলা স্টেশন ছাড়ে দুপুর ১টায় । বেনাপোল পৌঁছায় ৪,৩০মিঃ কমিউটার ট্রেনটি। বিকেল ৫ টায় খুলনার উদ্দেশে বেনাপোল ত্যাগ করে। রেলওয়ের সূত্র মতে, দিন দিন ট্রেনে যাত্রী বাড়ছে। স্থলপথে ভারত যাতায়াতের জন্য দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক  চেকপোস্ট বেনাপোলে। দেশের অন্যান্য স্থান ছাড়াও খুলনা-যশোর অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই পথে ভারত-বাংলাদেশ আসা-যাওয়া করেন। অনেক সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী মোংলা, খুলনা, যশোরসহ মধ্যবর্তী শহরগুলোতে যাতায়াত করেন এই ট্রেনে চেপে। বেনাপোল থেকে যশোরে ভাড়া ২০ টাকা ও খুলনার ভাড়া ৪৫ টাকা, মোহাম্মদ নগর ভাড়া ৫০টাকা,মোংলা ৮৫ টাকা। বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া কমিউটার ট্রেনে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক যাত্রী টিকিট না কেটে ট্রেনেওঠেন। এরা অর্ধেক পয়সায় গন্তব্যে পৌঁছে যান। আবার অনেকে টিকেটের গোটা টাকাই ফাঁকি দেন। চেকাররা তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কিন্তু  রাষ্ট্রীয় সম্পদ হওয়ায় লোকসান দেখিয়ে, এখন ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার যুক্তি তৈরি করা হয়েছে। খুলনা থেকে বাসযোগে বেনাপোল আসতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। ভাড়া ’দুইশত টাকা। আর কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল আসতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা, ভাড়া মাত্র ৫০/৪৫ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে জেলা শহর যশোরসহ ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। বিজিবি, পুলিশ এবং ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শকদের কড়াকড়ির কারণে আগের চেয়ে চোরাচালানিদের দৌরাত্ম্য কমেছে। চুরি-দারির পরও আগের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি টাকা জমা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে এ ট্রেন থেকে ৩৭ লাখ টাকা টাকা আয় করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই লাভজনক ট্রেনটির প্রতি নজর পড়েছে তাই ব্যবসার সুযোগ সন্ধানীদের। ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে পাকশীতে কর্মরত রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ বলেন, ‘নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া হয়। আপাতত বেনাপোল-খুলনা-মোংলা কমিউটার ট্রেনটি লিজ দেওয়ার কোনো চিন্তা নেই তবে  কোন কোম্পানি যদি শেষ ছয় মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চায়, তাহলে তাদের অনুকূলে লিজ দেওয়া যেতে পারে।’

বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা যেভাবে জেনেছেন আমিও ওই ভাবে জেনেছি। তবে লিজ দেওয়ার ব্যাপারে আমি অফিসিয়ালি কিছুই জানি না।’তবে মে মাসে ২৮তারিখে ২৫একটি টেন্ডার ড্রপ হবে। হলে যে কোনো সময় ট্রেনটি বেসরকারি খাতে চলে যাবে।

বেনাপোল-খুলনা -মোংলা কমিউটার ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হলে এই ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীরা ভয়াবহ ভোগান্তির শিকার হবেন। আর এ সুযোগে চোরাচালানীরা পূর্বের মত তাদের আধিপত্য বিস্তার করবে। তাই লাভজনক বেনাপোল-খুলনা- মোংলা কমিউটার ট্রেনটি যাতে বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া না হয় তার জন্য রেলরউপদেষ্টা  ও রেলের মহাপরিচালকের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102