ঘোড়সওয়ার সেনার মতো কোনো ঝড় তখনও আকাশ ছিঁড়ে নামেনি,
উটপাখির ডিমের মতো বিশাল বরফ বৃষ্টি গড়িয়ে পড়েনি এখনো।
চারদিকের আকাশ জুড়ে কেবল কালো মেঘের দৌড়ঝাঁপ—
ইভা চুপচাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে,
তার চোখে ধরা পড়ে একরকম শান্ত, ফাঁকা উদাসীনতা।
নাচের ক্লাস শেষে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলাম,
একটা টোটোয় উঠে বসতেই মনে হলো—
আবহাওয়া যেন হঠাৎ করেই খুব শান্ত,
সারা দিনের গরম আর ক্লান্তি যেন এক নিমেষেই
ঠান্ডা বাতাসের মতো গায়ে এসে লাগল।
টোটোচালক জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যাবেন?”
আমি হেসে বললাম, “চলো, সামনেই…”
আমার চোখ চলে যাচ্ছে মেঘের পেছনে—
একটা নিরাশ্রয় পথহারা কাঙালের মতো…
আব্বা তখন দরজায় দাঁড়িয়ে—
আমাকে দেখে ছুটে এসে
ইভাকে আদরে নিয়ে গেলেন ঘরের ভিতর।
ঠিক তখনই শুরু হলো ঝরঝর বৃষ্টি,
আর আমি পা রাখলাম বাড়ির দরজায়।
ঘরে ফিরে জানালার পাশে বসে চোখ রাখি বাইরে—
বৃষ্টির ফোঁটা যেন হাত বাড়িয়ে দেয়,
আমার গায়ে ছুঁয়ে দিয়ে চুপচাপ ভিজিয়ে ফেলে।
এইভাবেই প্রতিদিন আমার জানালায়
চুপি চুপি ঢুকে পড়ে মেঘ, বৃষ্টি, রোদ,
আরও কত অদ্ভুত শব্দ,
যাদের সঙ্গে আমি খেলি নীরবে,
অমল আর দইওয়ালার মতো সহজভাবে।
তাদের কোনো ভাষা নেই, উচ্চারণ নেই—
তবুও তারা প্রতিদিন আমার সঙ্গী হয়ে থাকে।
তারা ছুঁয়ে দিলেই আমি জেগে উঠি,
যেভাবে সোনার কাঠির ছোঁয়ায়
রাজকুমার জেগে উঠত ঠিক তেমন করে—
হৃদয়ের ভিতরটায়।
রামপুরহাট, বীরভূম, ভারত
২৫/০৫/২০২৫