লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম

জীবনের দীর্ঘ পথে হেটে ব্যক্তি সমাজ রাস্ট্র এবং তার দায়িত্ব কর্তব্য কি তা বোঝার মত কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়েছে! চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ার সময় আমার এলাকায় “আইয়ুবের মিলিটারি “এসেছিলো আমার নেতা “শামসুদ্দিন সিকা” কে ধরে নিতে! তিনি ছিলেন “মুজিবের” স্নেহভাজন সবুর খানের প্রতিদ্বন্দ্বী! সবুর খানের গলায় জুতার মালা বা তার আগমন রোধে লঞ্চ ডুবানো তে তিনি রাজ টিকিট ধারী ছিলেন, কোন সরকারি চাকরি পেতেন না মাস্টার্স পাশ সে আমলে হয়ে ও! উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন ও রাজনীতি ছিলো তার রক্তে মিশানো।
সেই মিলিটারি ধরতে সব স্কুল ছুটি দিয়ে দেয়া হয়ে ছিলো এলাকার। সবার সাথে আমিও ছুটেছিলাম আইয়ুবের মিলিটারি ধরতে! সে অন্য অধ্যায় —

প্রিয় পাঠক, সেই থেকে সামান্য রাজনৈতিক involvement আজীবন বহন করে কিছু বুঝতে শিখেছি! দেখেছি বঙ্গবন্ধু কে কমপক্ষে পঞ্চাশ বার বিভিন্ন মিটিংয়ে, টুঙ্গিপাড়া, বত্রিশ নাম্বার ধানমন্ডির বাড়ীতে! মোস্তাক জিয়া সাত্তার এরশাদ বেগম খালেদা হাসিনা সব আমলের শাসন, পরো রাস্ট্র নীতি এবং সফর! সব চেয়ে উচ্চ শিক্ষিত নোবেলজয়ী ডঃ ইউনূস সাহেবের মত এত উচ্চ শিক্ষিত ও নোবেলজয়ী কোন বাংলাদেশের নির্বাহী ছিলেন না! বাংলাদেশের মানুষ হয়তো মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে সততা, ডেকোরাম, রাষ্টীয় সম্পদ হেফাজত, বিদেশ সফরে অর্থ সংযম, নিজস্ব সুযোগসুবিধা ছাড় পাড় দেয়া, সত্যি কে মিথ্যা না বানানো বা মিথ্যা কে সত্যি বানানোর চেষ্টা, সরকার প্রধান বন্ধ করবেন আশা করেছিলো! আশা করেছিলো “আইনের শাসন”, নিজ কেবিনেটের লোকের অর্থের সচ্ছতা! কিন্ত কি দেখছে এ দেশের জনগন? কি হচ্ছে ?

নাহিদ সাহেবের বাসায় নব্বই হাজার কোটি টাকা সহ সোনা-দানা হীরা জহরত পেয়েছেন যৌথ বাহিনী! আপনার উত্তর কি? কোন উপদেষ্টার বাসায় পাওয়া যায় গরীবের চাল। দশ মাসে ১১/১২ বার বিদেশ সফর মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নিজে! লন্ডন সফর নিয়ে বাংলাদেশের সেরা কেলেঙ্কারি তৈরি করলেন তার প্রেস সেক্রেটারি।
বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সাথে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করবেন কি-না তা কি লন্ডন যেয়ে ঠিক করতে হবে? বৃটিশ প্রধান মন্ত্রী লন্ডন নাকি কানাডা তা কি লন্ডন যেয়ে উঁকি মেরে দেখে বলতে হবে? প্রসেস মত সরকারি সফর হলে বৃটিশরা এমন অভদ্র না, তারা কমপক্ষে একজন সচিবকে বিমান বন্দর, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা কে রিসিভ করতে পাঠাবেন না? সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে মিথ্যার আশ্রয় কোন দেশের সরকার প্রধান নিতে তার বিবেক শতবার বাধা দিবে!
বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত চাইতে হয় কি সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নাকি আদালতে সলিসিটর মাধ্যমে এ্যাটর্নীকে জানায় কোন পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করে। আপনাআপনি ঐ দেশের পার্লামেন্ট মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বিষয় টা জানতে পারেন!

স্বাধীনতার খোলনলচে পাল্টাতে যেয়ে দেশের চালকদের অযোগ্য ও মিথ্যা বলা এবং কারচুপি সারা বিশ্ব পদে পদে ধরে ফেলছে! বিএনপি বর্তমান সরকারের সমমনা দল, তা বুঝতে কি এতদিন সময় লাগে? আর দশ মাস পরে Right way পেয়েছেন যখন বুঝেছেন তখন ই বিএনপি নীতিনির্ধারকে জনাব তারেক জিয়াকে খুজতে লন্ডন যেতে হয়েছে। এতবড় একটা বোগাস সরকারি সফর না দেখায় ব্যক্তিগত ভাবে নিজ বিমান ভাড়ায় যেয়ে দেখা করে ফিরে এলে বাংলাদেশের জনগন বুঝতো আপনি একজন খালেদা হাসিনা থেকে আলাদা কিছু! একজন তারেক জিয়ার সাথে দেখা করতে দলীয় আলোচনার জন্য লন্ডনে ডরচেষ্টার হোটেলের ৩৭ টা কক্ষ ভাড়া নিয়ে রাস্টীয় কোষাগার থেকে সাড়ে পাচ কোটি টাকা খরচ করে ফেললেন?
তা-ও যদি নির্বাচন তারিখ টা ঠিক করে আসতেন জনগণকে ঘোষনার দেয়ার মত। আপনার সব কথায় “যদি এই হয় তা হলে এই হবে” জাতীয় শব্দ বড়ই শ্রুতি কটু !

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যার, এই লন্ডনে ১৯৭১ সালে আপনার থেকে অর্ধ শিক্ষিত একজন “মুজিব” পাকিস্তান জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সোজা লন্ডন পৌঁছালে ততকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী “স্যার জর্জ হিথ” তার বিদেশ সফর বাতিল করে মুজিব কে সাক্ষাৎ দিয়েছিলেন একজন অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী বরাবর।
জর্জ হিথ একজন “স্টার মার বা একজন ঋষি সুনাক” ছিলেন না! তিনি একান্ন বছর পার্লামেন্ট সদস্য অভিজ্ঞতা সম্পন প্রধানমন্ত্রী!
এই তো সেদিন আপনার দেশের সো কল্ড স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বৃটেনে গেলে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার চেয়ারের নিচে ফ্লোরে বসে কথা বলেছেন!
এই উচ্চ আসনের বাংলাদেশ টাকে আপনি অসন্মানের অতল গহবরে মারিয়ানা ট্রেন্স সম নিচে নামিয়ে এলেন লন্ডন থেকে! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে ও দেখলাম আপনার মানবতা বিরোধী কাজের বিবরন দিচ্ছেন একজন সাংসদ !

পাঠক, ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।