কলমেঃ ডক্টর মোঃ বদরুল আলম সোহাগ
বাবা, আজ তোমাকে খুব মনে পড়ছে। যদিও তুমি আমার চোখের সামনে নেই, তবু প্রতিটি নিঃশ্বাসে, প্রতিটি স্মৃতিতে তুমি আছো। সময় বয়ে গেছে, কিন্তু তোমার অভাব কখনও পূরণ হয়নি। পৃথিবী অনেক কিছু শিখিয়েছে, কিন্তু তুমি যে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিলে—সেটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাঠ।
তোমার হাত ধরে হাঁটা শেখা থেকে শুরু করে জীবনের প্রথম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হওয়া পর্যন্ত, তুমি ছিলে আমার ছায়া। মনে আছে, ছোটবেলায় পড়া না পারলে তুমি কখনও রাগ করতে না, বরং ধৈর্য ধরে বুঝিয়ে বলতে—”জীবনে যদি বড় কিছু হতে চাও, তাহলে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।”
তুমি ছিলে আমার জীবনের প্রথম নায়ক—কোনো অলৌকিক ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও তুমি একা হাতে আমাদের পরিবারকে আগলে রেখেছিলে। রাত জেগে পরিশ্রম করেছিলে শুধু আমাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তোমার নিজের স্বপ্নগুলো বিসর্জন দিয়েছিলে আমাদের স্বপ্নগুলোকে উঁচুতে তুলতে।
তোমার চলে যাওয়ার দিনটা আজও স্মৃতিতে অমলিন। আমি কিছুই করতে পারিনি, কেবল অসহায়ের মতো তোমার হাত ধরে কেঁদেছিলাম। এখন বুঝি, সময় আসলে কখনও থেমে থাকে না। কিন্তু কিছু মানুষ চলে যাওয়ার পরও সময় তাদের জন্য থেমে থাকে। তুমি তেমনই একজন।
আজ বাবা দিবসে অনেকে বাবাকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, উপহার দিচ্ছে। আর আমি তোমার ছবিটা বুকে চেপে ধরে চুপচাপ চোখের জল ফেলছি। যদি একটিবার বলতে পারতাম—”বাবা, আমি তোমাকে ভালোবাসি”, যদি একবার তোমার কণ্ঠে শুনতে পেতাম—”ভয় নেই, আমি আছি”, তাহলে জীবনটা কিছুটা সহজ হতো।
তুমি নেই, কিন্তু তোমার ভালোবাসা, তোমার আদর্শ, তোমার শেখানো মানবতা—সব এখনো আমার পথচলার আলো।
বাবা, যেখানে থাকো ভালো থেকো।
তোমার সেই ছোট্ট ছেলেটা আজও তোমাকে গভীরভাবে ভালোবাসে।
শুভ বাবা দিবস।