মো: রফিকুল ইসলাম টিটু, ধর্মপাশা:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বিভিন্ন হাওরে মশারী খনাজাল, চায়না জাল, কারেন্ট জাল দিয়ে চলছে প্রতিদিন দেশী প্রজাতির পোনা মাছ নিধনের হিড়িক।
জৈষ্ঠ্য ও আষাঢ় মাসে হাওরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ছাড়ে। সেই মাছটা বড় হতে তিন চার মাস সময় লাগে। কিন্তু অসাধু জেলেরা মাছটা বড় হওয়ার আগেই পোনা থাকতে মশারী খনাজাল দিয়ে ধংশ করে ফেলছে। ফলে দেশীয় প্রজাতীর মাছ দিন দিন বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। জৈষ্ঠ্য আষাঢ় শ্রাবন এই তিন মাস ভাটি অঞ্চলে কোন কাজ না থাকায় জীবিকার জন্য মাছ ধরার কাজটি বেশিরভাগ লোকজন করে থাকে। তাই এই সময় সরকার বিকল্প কিছু কর্ম সংস্থার ব্যবস্থা করলে এলাকার মানুষ জীবিকার জন্য আর পোনা মাছ শিকার করতো না।
আমরা জানি মাছে ভাতে বাংগালী, কিন্তু দিন দিন সাধারণ মানুষের মাছ কিনার দাম ক্রয় খমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। হাওরের দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সরকারের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি প্রয়োজন। ধর্মপাশা উপজেলার প্রায় প্রতিটা গ্রামে খনাজাল দিয়ে মাছ শিকার করে, প্রতিটি জাল এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার হাত লম্বা হয়। ১৫ থেকে ৫০ জন একটি নৌকা দিয়ে পোরু হাওর জুরে জাল টেনে মাছ শিকার করে।
সেলবরষ গ্রামের বাসিন্দা জেলে সালাম মিয়া বলেন, জৈষ্ঠ্য আষাঢ় শ্রাবন এই তিন মাস যদি হাওরে মশারী খনাজাল দিয়ে মাছ শিকার না হয় তাহলে দেশে মাছের কোন অভাব থাকবে না। আমারা মাছ না মারলে খাবকি। পেটের দায়ে এই পোনা মাছ শিকার করতে হয়, সরকার যদি ভাটি এলাকায় তিনমাস আমাদের জেলেদের ভাতা দিতো তাহলে আমরা চলতে পারতাম পোনা মাছ শিকার করতে হতেনা।
সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকারম হোসেন তালুকদার বলেন, দেশী প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সরকারের উচিত আগে মশারী খনাজালের খারখানা বন্ধ করা। তিন মাস জেলেদের ভাতা দিয়ে হাওরে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা। তাহলে আমাদের দেশি প্রজাতির মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে। সব সময় হাওরে সরকারি ভাবে মনিটরিং করতে হবে।
ধর্মপাশা উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, আমাদের অভিযান চলমান আছে, জৈষ্ঠ্য আষাঢ় শ্রাবন এই তিন মাস জেলেদের বিকল্প কর্ম সংস্থানে ব্যবস্থা সরকার করলে জেলেরা পোনা মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতো। তাহলে দেশি প্রজাতির মাছ রক্ষা হতো।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জনি রায় বলেন, আমরা অভিযান করবো। সরকার যদি কোন প্রনোদনা দেয় তাহলে জেলেদের দিয়ে দিবো। তবে পোনা মাছ শিকার করা আইন গত নিষিদ্ধ, এই বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।