মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ আর বিদেশি চিকিৎসা পার্থক্য!

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪৯ Time View

লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম

একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন অটোক্যাড অপারেটর, একজন পিএস, তিন জন সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল, ম্যাক, ইলেকট্রনিকস), সুপারভাইজার ফোরম্যান,

টেকনিসিয়ান, ইলেকট্রিসিয়ান নিয়ে মোটামুটি অফিস সেট! তারপর ও রুমের কম্পিউটার, নিজেকে কম্পোজ, বিদেশি করেস্পনডেন্স ও গোপন চিঠিগুলো নিজেকে করতে হয়, দেখতে হয় কত চিঠি আউট বক্সে এলো।
দৌড়াদৌড়ি বিদেশি এক্সপার্ট যখন আসেন, তারপর যোগাযোগ, বিদ্যুৎ গ্যাস প্রকৌশলীদের সাথে মিটিং সিটিং, হোটেল পূর্বানী তে নিয়ে খাওয়ানো, ধরুন ২১/২২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল এমনই। শুধু নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ পেতে এতকিছু।

বসে থাকতে থাকতে আর কম্পিউটারে কাজ করতে করতে ডানহাত অবশ প্রায়, এসির ঠান্ডা নাকি আর একটা কারন বলেছিলেন কোন ডাক্তার! হিপ পকেট থেকে মানি ব্যাগ বের করতে পারি না হাতের ব্যথায়!
সহধর্মিণী নিয়ে গেলেন ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতাল এবং থেরাপি রেডিয়েশন সেন্টার। ডাক্তার আমাকে রোজ দু’বেলা থেরাপি দেন, প্রতিবার তিনশো টাকা, দু’মাস।
কোন ফল নাই, আমি রোজ চোখের জল ফেলি।
সহধর্মিণী ডাক্তারের সাথে খানিক ইংরেজি বাংলা ঝগড়া করে ভিসা লাগালেন তিনদিনে কলকাতার, সাথে পিএস।

সিআরদত্ত রোডে ডাক্তার আর ডাক্তার। ফিজিও ডাক্তার আমার C T scan, Neck cervical spine scan করে দেখলেন, ক্ষয় গেছে!
স্মর্তব্য, আমি যখন সিটি স্ক্যান মেশিনের ভিতর থেকে বের হলাম, চোখে কিছু দেখছিলাম না, একজন মহিলা নার্স আমাকে হাত ধরে বিশ্রাম রুমে নিয়ে গেলেন! আমি বসার কয়েক মিনিট পর দেখতে পেলাম। আশ্চর্য হলাম, আমার যে ডাক্তার দুই মাইল দূরে আমাকে চেক-আপ করে এখানে পাঠালেন তার হাতে সিটি স্ক্যানের এক্সরে পেপার গুলো, আমার সহধর্মিণীর সাথে কথা বলছেন! ডাক্তার নিজে নাকি মেশিনের মনিটরিং এ দাড়িয়ে আমার কোন কোন পজিশনে স্ক্যান করতে হবে সে নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং প্রতিটা ছবি স্পটে দেখে আবার অন্য পজিশনে স্ক্যান করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজ গাড়ীতে করে আমাদের তার চ্যাম্বারে নিয়ে এলেন!

তিনি বললেন, “সেরে যাবে” ফলো মি। আমার সহধর্মিণী জিজ্ঞেস করলেন, “স্যার আপনার ভিজিট কত, বললেন সরকারের ২০০ রুপি বাঁধা আপনারা মেহমান যা ইচ্ছে দেন। তিনি ৩০০ রুপি মুট পাকায় তিলেন, ডাক্তার মুট পাকায় পকেটে রাখলেন! আবার কবে নেক্সট সিটং, উত্তরে ডাক্তার বললেন, আর আসতে হবে না, বেড়াতে আসবেন! প্রেসক্রিপশন টা ডাক্তার ভাজ করে দিলেন, অপর পক্ষ সেভাবে ব্যাগে রাখলেন।

হোটেলে এসে প্রেসক্রিপশন খুলে দেখে সহধর্মিণী হাহুতাশ
কোন ঔষধ নাই, শুধু ছোট তিনটা exercise.
মহিলা বলে কথা, তিনি পারলে তখন ই ঔষধ লিখাতে ডাক্তারের কাছে ছুটে যান, আমি নিবৃত্ত করলাম!
দেশে ফিরে এলাম, ডাক্তারের সাথে সহধর্মিণী একবার কথা বললেন! তিনি জিজ্ঞেস করলেন রোগীর অবস্থা কি, এ-ও বললেন, অসুবিধা না হলে মিনিটে ১৬/১৭ টাকা খরচ করে ফোন করার দরকার নাই, আমার অসুবিধা নাই, আপনার বড় একটা অংক খরচ! উল্লেখ্য, অনেক দেশের সাথে কল রেট ছিলো ৬/৭/৮ টাকা, ভারতের সাথে তখন ছিলো ১৬ টাকার মত।

এই হলো বিদেশি ডাক্তারদের আচরণ আর আমার দেশ তার উল্টো বলা যায়। আমি সুস্থ হয়ে গেলাম ১৫ দিনে! আজ ও আমি সে রোগে ইনশাআল্লাহ আক্রান্ত হই নাই।
এখন আমার পিএস নাই, কোন সহকারী ইঞ্জিনিয়ার নাই সাহায্য করে, শত স্টাফ কর্মচারী দেখভাল নাই। নিজে অনেক প্রবন্ধ, কবিতা নিজেই কম্পোজ করি, ইনশাআল্লাহ আমি সুস্থ !

ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102