শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
কালিয়াকৈর পৌরসভার ৪,৫,৬,৭, নং ওয়ার্ড পৌর বিএনপির উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত কালিয়াকৈরে বিয়ের প্রলোভনে তরুনীকে ধর্ষণে মৃত্যু, গ্রেফতার-২ ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস “স্টার ইংলিশ কেয়ার” প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের দিকনির্দেশনা দেন ধর্মপাশায় নারীদের নিয়ে যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানের উদ্যোগে উঠান বৈঠক শিশু শিল্পী আদিত্য পাল ফাউন্টেন পেন ও ২৫ পয়সার মুদ্রা উপহার দিল চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস এর হাতে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক শেখ আবু আসলাম বাবুর কাব্যগ্রন্থ তুলে দেন চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাসের হাতে খুলনার কয়রায় ফ্রিজে থাকা ৪৪ কেজি হরিণের মাংস জব্দ কবিতাঃ স্মৃতিবেদনা কবিতাঃ কবিতার মর্গে বাস!

জামায়াতে ইসলামীর লোগো বিতর্ক

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২৬ Time View

 

হামদুল্লাহ আল মেহেদী

১৯৯০ সাল থেকে (তখন নবম শ্রেণির ছাত্র) কৈশোর অবস্থায় নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকা যায়যায়দিন-পূর্নিমা-বিচিন্তা-আজকের সুর্যোদয়ের পাঠক ছিলাম, বিটিভির ৮ টার সংবাদ এবং রাত ১০ টায় রেডিওতে ভয়েস অব আমেরিকা শুনতাম। ভয়েস অব আমেরিকার ১ ঘন্টার অনুষ্ঠানে শুরুতেই ১০ মিনিটের বিশ্ব সংবাদ সকল ভাষায় একই সংবাদ প্রচার হতো। বিশ্ব সংবাদের পর বাংলাদেশ প্রতিনিধি গিয়াস কামাল চৌধুরীর টেলিফোনে পাঠানো রেকর্ড করা রিপোর্ট শুনানো হতো। ২০০০ সাল থেকে গিয়াস কামাল চৌধুরীর কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগে যেটা বুঝলাম তিনি যে আদর্শ লালন করেন ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিনিধি থাকা অবস্থায় অত্যন্ত সচেতন ও সতর্কভাবে সে আদর্শের প্রকাশ পেতো না। কথাগুলো বললাম এ কারনে কৈশোরে থেকেই রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করি। এ পর্যবেক্ষণে জামায়াতে ইসলামীকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করি।

আদালত কর্তৃক নিবন্ধন ও প্রতিক ফেরত পাওয়া প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াত ইসলামী আবারো আলোচনায়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও পেশাজীবি ফোরামের সভাপতি সরকারের সাবেক আলোচিত সমালোচিত সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরীর জামায়াত ত্যাগ, এবি পার্টি গঠন, এবি পার্টি ত্যাগ ও আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগী সদস্য ফরম ফিলাপ করে জামায়াতে যোগদান যখন ব্যাপক আলোচনার খোরাক যোগায় ঠিক সে সময়ে জামায়াতে ইসলামীর লোগো পরিবর্তন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় শুরু হয়েছে। কোনকোন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের লোগো ব্র্যান্ডএ পরিনত হয়। জামায়তে ইসলামি লোগোর ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত ব্যাপকতা ও বাস্তবতা রয়েছে। হঠাৎ লোগো পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কি কারনে- জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাখ্যা না দিলে বিতর্ক-আলোচনা চলতে থাকবে। প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা যখন রাষ্ট্র পরিচালনার পলিসি জামায়াতের কাছে জানতে চায় তখন লোগো পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার সাথে পাওয়ারে যাওয়ার যে হাওয়া আমরা অনুভব করি তার কোন যোগসূত্র আছে কি-না জানিনা। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ইমাম খোমেনির নেতৃত্বে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর যে প্রতিক (আল্লাহু) ব্যাবহার শুরু করেছিলো সেটা বর্তমান বাস্তবতায়ও বাস্তব রেখেছে। তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন আপোষ (অনুমান করে বলছি) বা পরিবর্তন বা অনেকটা লিবারেল’র দিকে যাচ্ছে? আমার মনে হয় যথাযথ ব্যাখ্যা দলের পক্ষ থেকে আসবে।

গত ৫ আগস্ট ২০২৪ এর আগে প্রায় ১৩ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রচন্ড নির্যাতন ও প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করতে না পারলেও কঠোর দলীয় আনুগত্য ও সু-শৃংখল কর্মী বাহিনীর কারণে দলটি ভালোভাবে এগিয়েছে, যা বর্তমান বাস্তবতায় বুঝা যাচ্ছে।

১৯৪১ সালে লাহোরে ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন খ্যাতনামা ইসলামি চিন্তাবিদ সৈয়দ আবুল আ’লা মওদুদী।

মওলানা মওদুদীর রচিত বিশাল ইসলামি সাহিত্যের ভান্ডার রয়েছে। আলোচনা সমালোচনা থাকলেও তাঁর সাহিত্য ও তাফসীর গ্রন্থ তাফহীমুল কোরআন আধুনিক শিক্ষিত মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। ঢাকায় সংগঠনটির দাওয়াতি কার্যক্রমে বেশি ভূমিকা রাখেন লেখক, গবেষক খুররম জাহ মুরাদ, এ নামটি এখনকার নেতৃত্ব মনে রাখছেন কিনা জানিনা। বাংলাদেশ অঞ্চলে জামায়াতের বিস্তৃতিতে যাদের ভূমিকা ছিল বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে প্রধানতম মাওলানা আব্দুর রহিম, বিশ্বের সর্বকালের কয়েজন ইসলামি চিন্তাবিদের একজন মাওলানা আবদুর রহিম, তিনি পরবর্তীতে জামায়াতে থাকতে পারেননি। এছাড়াও আরো যাদের ভুমিকা ছিল তাদের মধ্যে আব্দুল খালেক, অধ্যাপক গোলাম আযম, আব্বাস আলী খান, শামসুর রহমান, মাওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ অন্যতম। এঁরা কেউই বেঁচে নেই। জামায়াতের ২য় প্রজন্মের নেতারাও কেউ কেউ যুদ্ধপরাধের অভিযোগে ফাঁসিতে এবং অন্যরা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। বর্তমানে সংগঠনটি ৩য় ও চতুর্থ প্রজন্মের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। বয়স ও অভিজ্ঞতা কম হলেও মাঠের কর্মীরা তাদের দল পরিচালনা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতি সন্তষ্ট বলে জানা যায়।

জামায়াতের অগ্রগতির পিছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের। মেধাশূন্য সন্ত্রাস নির্ভর ছাত্র নেতৃত্ব প্রত্যাখ্যানের স্লোগান দিয়ে এগিয়ে যাওয়া ছাত্র সংগঠনটি এক সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় বড় কলেজ গুলোতে আধিপত্য বিস্তার করে। শিবিরের কর্মী সমর্থক ছিলেন এরকমের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি বলে জানা যায়। বিগত ফ্যসিবাদ সরকার তাদেরকে প্রকাশ্যে তৎপরতা চালাতে না দেয়ার কারণে শিবিরের বর্তমান অবস্থা বুঝা মুশকিল ছিলো। তবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন এবং ডাকসু ও জাকসুর ভূমিধস বিজয়ে প্রমাণ হয় ইসলামি ছাত্রশিবির বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলী সাংগঠনিক তৎপরতায় সঠিক ও সফলভাবে এগিয়েছে। বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক মহলে শিবিরের বর্তমান গ্রহণযোগ্যতা ও প্রশংসা ১৯৮১ সালের পরে কখনও ছিলো না। বর্তমানে জামায়াতের শীর্ষ ও মহানগর পর্যায়ের অধিকাংশ নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিবিরের সাবেক নেতারা। শিবিরের প্রতিষ্ঠাকালীন ২ জন সভাপতি মীর কাশেম আলী ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। বাকী সাবেক সভাপতিদের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও ২ জন সাবেক সভাপতি বিদেশে স্থায়ীভাবে আলিশান জীবন যাপন করছেন। একজন সাবেক সভাপতি নিস্ক্রিয় আরেকজন বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুবরন করেছেন, আরেকজন গুরুতর অসুস্থ। একজন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর মজিবুর রহমান মন্জু এবি পার্টির চেয়ারম্যান। শিবিরের সাবেক সভাপতিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী থেকে হোমিও ডাক্তার পর্যন্ত আছেন। এদের মধ্যে ৫ জন জামায়াত থেকে দুরে থাকায় (দুরে-কিছুটা দুরে) প্রশ্ন উঠতে পারে সভাপতি থাকার সময় তারা কি শিক্ষা দিয়েছেন ও কি দীক্ষা নিয়েছেন।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রচন্ড নির্যাতনের মধ্যে টিকে থাকা সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান আমীর ডাঃ সফিকুর রহমানে জনবান্ধন ও মানবিক কাজ এবং সম্মিলিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর সুচিন্তিত ও গঠনমূলক কর্মসূচি বহুল আকাঙ্ক্ষিত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভাোটাররা কিভাবে গ্রহণ করে তা সময়ই বলে দিবে। (এ আলোচনা একান্তই আমার পর্যবেক্ষণ, নিজস্ব আকাঙ্খা নয়)

লেখক: হামদুল্লাহ আল মেহেদী, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ লেবার পার্টি,সভাপতি, গভর্নিং বডি , পেরিয়া মাদ্রাসাতুল বানাত-আলীম মহিলা মাদ্রাসা

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102