
মোঃ রায়হান পারভেজ (নয়ন)
নিলফামারী জেলা প্রতিনিধি
রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত ভূমিকা প্রশংসিত
নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব এবারে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মোট ৭৬টি পূজা মণ্ডপে আনন্দ, ভক্তি আর শান্তির আবহে উদযাপিত হয়েছে এই উৎসব।
সবচেয়ে বড় দিক হলো রাজনৈতিক দলের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগে এবারের দুর্গোৎসব সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
উৎসবের আবহ প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল দর্শনার্থী ও ভক্তদের উপচেপড়া ভিড়। পূজার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয়েছে আরতি, ভক্তিগান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মণ্ডপগুলোকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল আলোকসজ্জা ও মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্মে।
শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী নয়, মুসলিমসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষও মণ্ডপগুলোতে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে সজাগ থাকে। ফলে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ পরিণত হয় শান্তিপূর্ণ ও আনান্দময় মিলনমেলা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা
উপজেলা প্রশাসনের কঠোর তদারকির পাশাপাশি ডিমলা থানা অফিসার্স ইনসার্চ মোঃ ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে ডিমলা থানা পুলিশসহ জেলা থেকে আশা পুলিশ ও , আনসার, গ্রাম পুলিশসহ একাধিক নিরাপত্তা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে।
প্রতিটি পূজা মণ্ডপে টহল ও পাহারার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়, যারা নিয়মিত মণ্ডপ পরিদর্শন করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাদের সজাগ উপস্থিতি ভক্তদের মনে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার অনুভূতি জাগায়।
সাংবাদিকদের ভূমিকা
স্থানীয় সাংবাদিকরা এবারের দুর্গোৎসবে দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন। শুধু সংবাদ সংগ্রহ নয়, বরং পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা ও পরিবেশ পর্যবেক্ষণেও সক্রিয় ছিলেন তারা।
যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন সাংবাদিকরা। ফলে উৎসব নির্বিঘ্নে শেষ করতে তাদের অবদান প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে।
সাধারণ মানুষের সহযোগিতা
এবারের দুর্গোৎসব সফল হওয়ার পেছনে সাধারণ মানুষের ভূমিকাও ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয় বাসিন্দারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। তরুণরা স্বেচ্ছাসেবকের মতো কাজ করে প্রতিটি মণ্ডপে পাহারা দেয়, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখে।
ফলে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়নি। সাধারণ মানুষের এই সজাগতা উৎসবকে আরও আনন্দঘন করে তুলেছে।
প্রশাসনের মন্তব্য
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানা পুলিশের কর্মকর্তারা একাধিক পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। তারা বলেন
রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই জনগণ, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ডিমলার মানুষের ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক।
শান্তি ও সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত
ডিমলার এবারের দুর্গোৎসব শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং সামাজিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে রইলো।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মিলনমেলায় ৭৬টি পূজা মণ্ডপ হয়ে উঠেছে আনন্দ, শান্তি ও সম্প্রীতির কেন্দ্রবিন্দু।
কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উৎসব শেষ হওয়ায় প্রশাসন, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ মানুষ সমানভাবে প্রশংসিত হয়েছেন
তবে বিএনপি ও জামায়াত সহ অন্যান্য রাজনীতিক নেতা কর্মীদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তারাও সজাগ ছিল ও পূজা মন্ডপ গুলো পরিদর্শন করে এবং খোঁজ খবর নেয় যাতে কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে না পাড়ে দুষ্কৃতিকারীরা।