নরসিংদী প্রতিনিধি:
রান ফর বাংলাদেশ, রান ফর হেলথ’ স্লোগানে নরসিংদীর রায়পুরায় আন্তর্জাতিক মানের ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় দেশ-বিদেশের ৭শতাধিক দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করেছেন। রায়পুরা উপজেলা প্রশাসন ও রায়পুরা রানার্স কমিউনিটির যৌথ আয়োজনে ৪টি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত ৭শতাধিক নারী-পুরুষ দৌড়বিদ অংশ গ্রহন করেন। রায়পুরা ম্যারাথন বহির্বিশ্বে আলো ছড়াবে গত বছরের মতো এবারও রায়পুরায় অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ম্যারাথন দৌড়। বাংলাদেশের বুকে রায়পুরাকে ব্র্যান্ডিং করতে বৃহৎ এই প্রচেষ্টা। ব্যাপক প্রস্ততি নিয়ে বণিল সাজে আনন্দঘন মনোরম উৎসব মুখর পরিবেশে দেশ-বিদেশী দৌড়বিদের উপস্থিতিতে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৩ অক্টোবরের রায়পুরা ম্যারাথনের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এ আয়োজনে অংশ গ্রহন করেন ৪২ কি. মি দৌড়ে ১৮০জন, ২১ কি. মি দৌড়ে ১৮৫ জন, ১০ কি. মি. দৌড়ে ৩৫০ জন নারী-পুরুষ দেশি-বিদেশী দৌড়বিদ এবং ৫০০ মিটার দৌড়ে ৩০জন শিশু অংশ গ্রহন করেন। ম্যারাথনের দিন নরসিংদী-রায়পুরা আন্তঃজেলা সড়কের নির্ধারিত এলাকা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে ২ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ, আনসার সদস্য, গ্রামপুলিশ সহ আইশৃঙ্খলা বাহিনীর দেড়শতাধিক সদস্য সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম চিকিৎসাসেবা দেবেন। পরে প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর আগের দিন ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় ম্যারাথন উপলক্ষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ‘রায়পুরা ম্যারাথনে’ দেশ-বিদেশের ৭ শতাধিক দৌড়বিদ নরসিংদীর রায়পুরায় ম্যারাথনে অংশ গ্রহন করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সকাল ১১ টায় প্রধান অতিথি হিসেবে ম্যারাথনের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন বাংলাদেশ জ্বালানী খনিজ মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম, রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা, সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) বায়েজিদ বিন মুনসুর, রায়পুরা থানা অফিসার ইনচার্জ আদিল মাহমুদ । এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়াটসন গ্রæপর চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফাইজুর রহমান,জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল আমিন ভুইয়া রুহেল, উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন, জেলা বিএনপির সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ২ বারের মেয়র আব্দুল কুদ্দুছ মিয়া,জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক ভুইয়া মোহন,জেলা যুবদলের সেক্রেটারী হাসানুজ্জামান সরকার, রায়পুরা পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস আলী মুন্সি ও সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম পলাশ,উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা বিএনপির সদস্য কাজী আসাদুর রহমান মিলন,জেলা বিএনপি নেতা শাহাজান সরকার সোহাগ,উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আলফাজ উদ্দিন মিঠু ও সদস্য সচিব নূর আহমেদ চৌধুরী মানিক, রায়পুরা পৌর যুবদলের আহবায়ক সাইফুল আহমেদ সোহেল ও সদস্য সচিব সুমন নেওয়াজ, রায়পুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি আফরিনা আসাদ, জেলা সাংবাদিক সমিতির সাধারন সম্পাদক বশির আহম্মদ মোল্লা,উপজেলা রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি তৌফিকুল হক, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি হারুনুর রশীদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তফা খান ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হক,উপজেলা রিপোর্টাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অজয় সাহা, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো: মুছা মিয়া ও সেক্রেটারী মো: সুমন মিয়া, রায়পুরা পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি হাবিবুল্লাহ হাবিব ও সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা মিয়া, উপজেলা তাঁতীদলের সভাপতি হুরমজ মোল্লা ও সেক্রেটারী শেখ আলমগীর হোসেন, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি ফিরুজ আল মুজাহিদ, রায়পূরা পৌরসভা তাঁতি দলের সভাপতি চাঁন মিয়া ও সেক্রেটারী বাদল মিয়া, রায়পুরা পৌরসভা মহিলা দলের সভাপতি পদ প্রার্থী মৌসুমী শবনম রোপা, রায়পুরা পৌরসভা মৎস্যজীবিদল সাধারন সম্পাদক মো: জালাল মিয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ম্যারাথন এডমিন মোহাম্মদ সবুজ রানা ।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুদ রানা জানান, ম্যারাথনের ৪টি ক্যাটাগরিতে ৭০০ জনের বেশি দৌড়বিদ অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া ও চেক রিপাবলিকের নাগরিক। ভোর ৪.৪২ মিনিটে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু হয়ে নরসিংদী-রায়পুরা সড়কের হাসনাবাদ নম্বর ব্রিজ এলাকায় গিয়ে ফের উপজেলা পরিষদে এসে শেষ হয় এ দৌড়। এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটারের ফুল ম্যারাথনের অংশ নেওয়া দৌড়বিদদের দুইবার এই পথ পাড়ি দিতে হয়েছে আর ২১ কিলোমিটারের হাফ ম্যারাথনে একবার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুদ রানা বলেন, জেলার ইতিহাসে বৃহৎ এ আয়োজনে দৌড়বিদদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতস্ফুর্ত। ম্যারাথনের অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনে নির্ধারিত সীমা ছিল ৭০০ জনের। তবে হাজারেরও বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন করতে চেয়েছিলেন।
তবে রেজিস্ট্রেশন করা কয়েকজন নানা কারণে উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানান তিনি। শুক্রবার সরেজমিন উপজেলা পরিষদে মাঠে দেখা গেছে, ম্যারাথনে অংশ নিতে ভোরে অসংক জড়ো হয়েছেন ১৫ বিদেশি নাগরিকসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দৌড়বিদরা। বিভিন্ন বয়সী ও পেশার দৌড়বিদের উপস্থিতিতে সেখানে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। আয়োজকরা জানান, ম্যারাথন উপলক্ষে ভোর সাড়ে ৪টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নরসিংদী-রায়পুরা আঞ্চলিক সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। দৌড়বিদদের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যসহ ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করেন। চিকিৎসা সেবার জন্য ছিল অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম।
আর এ আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল নরসিংদী প্রেসক্লাব,উপজেলা রিপোর্টার ক্লাব, রায়পুরা সাংবাদিক ফোরাম।
অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদ মো. মনির হোসেন বলেন, “শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য দৌড়ের বিকল্প নেই। যুব সমাজকে মাদকসহ সকল অবক্ষয় থেকে বাঁচাতে সবসময় এমন আয়োজন থাকা উচিত। ঢাকা থেকে আসা নারী প্রতিযোগী সিদ্দিকা মিলি জানান, “আমি এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সবসময় উৎসুক হয়ে থাকি। দেশের যে প্রান্তেই এমন আয়োজন হয় অংশগ্রহণের চেষ্টা করি, খুবই ভাল লেগেছে।”এবারের ম্যারাথনে অংশ নেওয়া বিজয়ীরা দেওয়া হয়েছে মেডেল, সনদ । এছাড়া ৪ ক্যাটাগরিতে মোট ১২ জনকে দেওয়া হয় বিশেষ পুরস্কার। রায়পুরা ম্যারাথন আয়োজক কমিটির সভাপতি মো: মাসুদ রানা বলেন,“সুন্দর একটি আয়োজনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনের চেষ্টা থাকবে