
লেখকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
আজ ২১ শে অক্টোবর। ১৯৪৩ সালে এইদিনে নেতাজি সুভাষ বসুর অধীনে “আজাদ হিন্দ ফৌজ” গঠিত হয়েছিলো! অনেক বাঙালি ২১ শে অক্টোবর কে ভারতের স্বাধীনতা দিবস মনে করে! স্ব দেশী আন্দোলনের সব সমর্থক রা মনে করতেন! তারা আজ সবাই গত হয়েছেন!
তিরিশ হাজারের উপরে হিন্দ ফৌজ স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করতে-করতে শহীদ হয়েছিলেন!
সিঙ্গাপুর দখলে নিয়েছিলেন বৃটিশ সৈন্য তাড়িয়ে! সারা ভারতবাসী এই ইতিহাস সবাই জানেন না, জানতে দেয়া হয় নাই!
সাড়া ভারতবাসী কি চিনে ক্ষুদিরাম, নন্দকুমার, উদা দেবি, নীলকর যিনি কাস্তে কোদাল নিয়ে সহস্র নারী নেত্রিত্বে রুখে দিয়েছিলেন সেই নারী কৃষক সপূতি দেবীকে, চিনে কেউ কমলা দেবি, বিনা দাস, রানী গেইদিনলু, মাতঙ্গী হাজরা, লাসমি সাগল, আছে কি ভারতের ইতিহাসে এমন সহস্র জীবন দানকারীর নাম?
আছে কি হিন্দু থেকে বেশী মুসলমান ভারত স্বাধীনতায় জীবন দেয়া মুক্তি যোদ্ধা, কবি লেখক সাংবাদিক পত্রিকা ছাপানো গোপন প্রেস মালিকের নাম?
প্রিয় পাঠক, প্রায় ৭৭ বছর আগে অ খন্ড ভারত স্বাধীন হয়েছে মিলেমিশে থাকা হিন্দু মুসলমান দ্বিখণ্ডিত ভারত হয়ে দুই নামে, ভারত ও পাকিস্তান! কত লোক জিন্নাহর ডাইরেক্ট এ্যাকশন দাঙ্গায় মারা গেছিলো। এক অংশ থেকে অন্য অংশে হিন্দু মুসলমান মাইগ্রেশানে কত মানুষ মিসিং হয়েছিলো, হত্যা, গুম, ধর্ষণের শিকার কত নারী? ইতিহাস কি তাদের খুঁজে দেখেছে?
পাঠক, কেন অখণ্ড বাংলার মা বোনেরা তাদের সোনাদানা সুভাষ বসু কে খুলে দিয়েছিলেন ভারতের স্বাধীনতার জন্য? কেন সুভাষ বসু কে ভারতের মাটিতে ফেরত আসতে দেয়া হয় নাই? তিনি ৮৯ কেজি সোনাদানা নিয়ে কাকে দিতে কোন দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতের স্বাধীনতা কিনে আনতে!
সুভাষ বসু দেশে ফিরলে বাংলা ভাগ হতে দিতেন কি না? কে হ’তেন ভারতের প্রধান মন্ত্রী, সুভাষ বসু নাকি জওহরলাল নেহেরু? নাকি ভারতের সেভেন সিস্টার্স ও অখণ্ড বেঙ্গল নিয়ে একটা বৃহৎ বেঙ্গল তৈরি হতো, ২২ শো কিলোমিটার দূরত্বের ভিন্ন ভাষাভাষী পাকিস্তানের সাথে আমাদের লেজুড় কেউ জুড়ে দিতে পারতো না!
আমাদের তেইশ বছর বৈষম্যের শিকার হতে হতো না, নির্বাচন কে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েও নয় মাসের যুদ্ধে তিরিশ লক্ষ বাঙালির প্রাণ যেতো না, চার লক্ষ মা-বোনকে পাক হানাদার ধর্ষণ করতে পারতো না, এক লক্ষ জারজ সন্তান জন্ম নিতো না এবং আজ ২০২৫ সালের সেই ২১ শে অক্টোবর তাকিয়ে দেখতে হতো না বহিঃশক্তির প্রেসক্রিপশনে ঢাকা বিমানবন্দর সহ ইপিজেড, সচিবালয়, গার্মেন্টস, ইসলামি ব্যাঙ্ক (চকবাজার) এমনি স্হাপনা পুড়ত!
বাংলাদেশ এখন অনেকটা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের অপারেশন সার্চ-লাইট চলার মত বা ১৯৭১ সালের পাকসেনা পরাজয়ের আগে চৌদ্দই ডিসেম্বরের মত হত্যা যজ্ঞে ও আগুন দিয়ে মূল্যবান স্হাপনা ধ্বংস মনে করায় দিচ্ছে!
প্রিয় পাঠক, ভারত মাঝে-মাঝে বলে থাকে জাপানে নেতাজি সুভাষ বসুর দাহ ভশ্ম সংরক্ষিত আছে যা নিয়ে আসা যায়। এই নিরেট মিথ্যা কথাটা মাঝে-মাঝে কেন প্রকাশ করা হয়? নেতাজি সুভাষ তো জাপানে যান ই নাই। তার বিমানের গন্তব্য পথ কোথায় ছিলো, কাকে তিনি উপঢৌকন দিয়ে ভারতকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন বৃটিশ বেনিয়াদের হাত থেকে?
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।