
দলে গণতন্ত্র না থাকলে দেশে গণতন্ত্র থাকে না।
আর দল অগণতান্ত্রিক রেখে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
এই চরম সত্য কথাগুলো দীর্ঘ ২ যুগ ধরে লেখনী ও বক্তব্যের মাধ্যমে বারবার বলে আসছিলেন জনতার নেতা লেখক, গবেষক রাস্ট্রচিন্তক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল-বিডিপি এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শামছুল আলম চৌধুরী সুরমা ভাই। আমাদের স্টাফ রিপোটার আল আমিন রনিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে প্রায়ই সভা সমাবেশ, টিভি টকশোতে আলাপ আলোচনা তর্ক-বিতর্ক হয়। দেশের জ্ঞানী গুনি সবাই দেশের সমস্যার কথা বলেন কিন্তু পরিস্কার করে সমাধানের কথা বলেন না।
আজকে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে যে সংস্কার কমিশন হলো এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন হলো তাদের যে সিদ্ধানগুলোই আমি মুলত ২ যুগধরে বলে আসছিলাম তখন অনেকেই গুরুত্বদেন নাই বরং সংস্কার নিয়ে হাসাহাসি করছিলো।
জননেতা শামছুল আলম চৌধুরী সুরমা ভাই আরো বলেন আমাদের দেশের রাজনীতির মূল সমস্যা যতনা নেতাদের মধ্যে, তারচেয়ে বেশী সমস্যা রাজনৈতিক দলের পদ্ধতিতে। তাই ব্যক্তি পরিবর্তন করে সমস্যা সমাধান করা যাবে না। রাজনৈতিক দলের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি আরোর বলেন ,আমি আমার প্রবাস জীবনে বিশ্বের প্রায় সকল দেশের সচেতন নাগরিকদের সাথে কথা বলে তাদের দেশের সুশাসনের কারণ নির্ণয় করে সে সব নিয়মনীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে একটা ফর্মুলা তৈরি করে এর নাম দিয়েছি “বিডিপি ফর্মুলা।”
এই ফর্মুলা বাস্তবায়ন হলে দলে এবং দেশে কখনো পরিবারতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, বা জোর করে ক্ষমতা দখলের সুযোগ থাকবে না। দলের নেতা নির্বাচনে বা প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হবে না। বিডিপি ফর্মুলায় দলে বা জোটে একাধিক নেতা প্রধানমন্ত্রী পদে দলের মনোনয়ন চাওয়ার সুযোগ থাকায় নেতারা দলের ভেতর লবিং না করে জনগণের কাছে যাবেন জনগণ যাকে সমর্থন দিবে তিনিই হবেন দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনিত ব্যক্তি। যে কারণে পদের জন্য দলের ভেতর লবিং, হিংসা হানা-হানি থাকবে না। পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকবে। কারণ নেতার যোগ্যতা নির্ণয় করবে জনগণ; দলীয় প্রধান নয়। তাই একই দলে বা জোটে একাধিক যোগ্য ব্যক্তি রাজনীতি করতে সমস্যা হবেনা। কারণ বিডিপি ফর্মুলায় জনগণই নেতা নির্ধারনের মালিক।
শামছুল আলম চৌধুরী সুরমা ভাই আরো বলেন বিডিপি ফর্মুলা দেশের মানুষের মনের কথা যা আমরা প্রতিদিন রাস্তা-ঘাটে, হাটে-মাঠে, চায়ের দোকানে, মানুষের মুখে শুনতে পাই এই ফর্মুলায় দেশের যে কোনো যোগ্যব্যক্তি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন তার জন্য পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন পড়বে না বা কেউ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে পারবে না। আপনি বা আপনার সন্তান উপযুক্ত হলে সে ও দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারে। আপানি কি চান না আপনার সন্তান উপযুক্ত হলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হোক?
শামছুল আলম চৌধুরী সুরমা ভাই আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে পরিবর্তনের জন্য, এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে, একটি গণতান্ত্রিক, সুশাসন-ভিত্তিক এবং মানবাধিকার-সুরক্ষিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য , যেখানে জনগণের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে।
কেন আমূল সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করা হয় এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন
ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা: বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামো এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং দলীয়করণে জর্জরিত বলে মনে করা হয়, যেখানে ক্ষমতার ভারসাম্য নেই।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা: রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে এবং এদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব: গণতন্ত্র, সুশাসন, বাকস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার (যেমন গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা) প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন বলে মনে করা হয়।
দুর্নীতি ও অপশাসনের অবসান: দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এবং লুটপাট বন্ধ করে একটি গঠনমূলক ও স্বচ্ছ রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।
সুরমা ভাই পরিশেষে বলেন জুলাই বিপ্লব একটি সুযোগ। কিন্তু এই সুযোগ যদি রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীসমাজ কাজে লাগাতে না পারে, তাহলে ইতিহাস একদিন তাদেরকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে নিশ্চয়ই। আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব নেই। যেন আগামী প্রজন্ম গর্ব করে বলতে পারে- “আমার বাংলাদেশ বদলে গেছে, কারণ আমরা পিছপা হইনি। আবারো বলবো ইউ ওয়ান্ট চেঞ্জ নো কম্প্রমাইজ এবাউট চেঞ্জ।