
মোঃ রায়হান পারভেজ নয়ন
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বুড়ি তিস্তা নদী খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রকল্প বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে কুটিরডাঙ্গা এলাকা থেকে শুরু হয় বিরাট মশাল মিছিল। এতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ পাঁচ গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ—নির্ধারিত খনন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নদীর তীরবর্তী বহু পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের দাবি, বহু বছর ধরে তিন থেকে চার ফসল উৎপাদন হওয়া উর্বর এই জমি নদী খননের নামে নষ্ট করা হলে হাজারো মানুষ জীবিকা হারাবে।
‘জনগোষ্ঠী’ সংগঠনের মুখপাত্র মো. আব্দুল আলিম বলেন,
আমরা জমির বৈধ মালিক হয়েও প্রকল্পের কোনো সিদ্ধান্তে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। জোর করে এই প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের ক্ষতি হবে এমন কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে স্থানীয় আলিম ও শামিম জানান—পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু ব্যক্তি বিভিন্নভাবে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তিনি বলেন,
এখানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ উদ্বিগ্ন। প্রশাসনের কেউ এসে কথা শোনে না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা মশাল হাতে মাঠে নেমেছি।
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, তারা নদী খননের পক্ষে থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে অনিয়ম রয়েছে। তিনি দাবি করেন,
২০০৯ সাল থেকে নদী নিয়ে বিরোধ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে সাতশ কৃষকের নামে ১১টি মামলা দিয়েছে। এসব মিথ্যা মামলায় অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, খনন প্রকল্পের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সিভিল মামলা করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে—পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এর আগে ২ ডিসেম্বর খনন যন্ত্রপাতি এলাকায় আনার চেষ্টা হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এলাকাবাসীর দাবি—উন্নয়ন প্রকল্প যেন মানুষের বসবাস ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করে না, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান নেওয়া প্রিয়োজন।