
কলমেঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম
ছাত্র জীবনে চিনতাম একঝাঁক চৈনিক বিপ্লবী কে যারা বাংলাদেশ কে চীনা ধাঁচের সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্য কলম ধরেছিলেন! তখন আমরা দ্বিজাতিতত্ত্বের পাকিস্তানে বাস করি। পাকিস্তানের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের চাকুরী, সেনাবাহিনীতে নিয়োগ, মিল কলকারখানা নির্মাণ, অস্ত্র কারখানা নির্মান, রোড ঘাট নির্মাণ, স্কুল-কলেজ নির্মান, সব কিছুতে বিস্তার ফারাক ছিলো! যদি গড়ে আপনাদের একটা লাম সাম বলে বুঝাই তা হলে ধরুন ১০:১., পশ্চিম পাকিস্তানে যখন দশ-টা মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি তৈরি হয়েছে বা পশ্চিম পাকিস্তানে যখন ১০ টা অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি তৈরি হয়েছে তখন অনেক বাক যুদ্ধ করে একটা মেশিন টুলস বা একটা অস্ত্র কারখানা গাজীপুর তৈরী করে দিয়েছেন পাকিস্তান শাসকরা।
বাঙালিরা গনতন্ত্র চাইতো, পশ্চিম পাকিস্তানের লোকজন সামরিক তন্ত্রের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
ঈসকান্দার মির্জা, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, বিভক্ত পাকিস্তান ও সামরিক শাসন চলেছে লাগাতার জিয়াউল হক, পারভেজ মোশাররফ ইত্যাদি !
প্রিয় পাঠক, আমার বিষয় টা হচ্ছে ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চৈনিক পন্হীরা দারুন ভালো লিখতেন, ভালো জনসভায় বলতেন, কিন্তু তাদের কখনও পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্য বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনি নাই! শ্রদ্ধেয় বদরউদ্দিন উমর, হক তোহা, ডঃ আলীম আল রাজী, ডঃ এনায়েত উল্লাহ খান, রাশেদ খান মেনন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সবাই ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন শুধু।
পাকিস্তানের দুই প্রান্তের বৈষম্য নিয়ে গলা ফাটিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী ভাসানী মুজিব তর্কবাগীশ ইত্যাদি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কয়েকশত মেজর, জেনারেল, কর্নেলের ভিতর বাঙালি অফিসার সর্বোচ্চ সবে ধন নীলমণি “কর্নেল ওসমানী”! পূর্ব পাকিস্তানের চৈনিক রা ভারতের কাছে কি চাইতেন, ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ঢালতলোয়ারহীন পূর্ব পাকিস্তান ছিলো অরক্ষিত, ফলে এই দুর্দশা দেখে জনগন মুজিবের দিকে ঝুকে গেলো এবং তার প্রভাব পড়লো ১৯৭০ এর নির্বাচনে! চৈনিক রা না দেশের উপকারে এলো না পাকিস্তান কে জোড়া রাখার কোন জনসমর্থন জোগাড় করে পাকিস্তান কে সাহায্য করতে পারলো!
পাঠক, ৩৬ শে জুলাই বিপ্লবীদের মুখের ভাষা অনেক মধুর। অনেক টা ততকালীন চৈনিক ভাষার সাথে মিল পাই। বেশ কিছুটা ক্লাসিকাল যা সাধারণ জনগণের দুর্বোধ্য! সেগুলো না ডঃ ইউনূস সাহেব কে সাহায্য করছে না এদেশের কলকারখানা দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ বা দেশের আর্থিক সচ্ছলতায় কাজে আসছে! একটা মিষ্টি শ্লোগান নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখি তারা কি বলেন?
” ভারত যতক্ষণ প্রতিবেশী শুলভ আচরন করবে ততক্ষণ তাকে বন্ধু ভাববো, তার আগ্রাসন বাদী আচরণ মেনে নেবো না কোনদিন!” দারুন সুন্দর কথা, কেন আমরা ভারতকে আমাদের দেশের এক ইঞ্চি মাটি দেবো বা আমাদের স্বার্থ তাদের কাছে লুটিয়ে দেবো! কিন্তু ব্রাদার, ভারত কিকি সুযোগ বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে তা তো স্পষ্ট আপনিও জানেন না! তাদের ইলিশ দিচ্ছেন, তাদের বিদ্যুৎ কিনছেন, তাদের করিডর ব্যবহার করতে হচ্ছে বিদেশে ট্রান্স শিপ মেন্ট করতে! চিকিৎসার জন্য আজও সমান ভাবে যাচ্ছেন, কাঁচামরিচ পেয়াজ কত ফালতু জিনিস আনছেন ভারত থেকে! তা হলে আগ্রাসন আইআইটেম তো Isolate করে পৃথক ক্যাটাগরি করা হলো না আজও! ৬০ লক্ষ ভারতীয় তো আজ ও বাংলাদেশে চাকুরী করে চলছে বহাল তবীয়তে!
ইংরেজ রা আমাদের তিনদিকে তাদের ভূখন্ড দিয়ে গেছে! একদিকে বঙ্গোপ সাগর, তা হলে আমাদের যাওয়ার জায়গা কোনদিকে?
ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের আগ্রাসন গ্রহন করবেন তা-ও এদেশের লোকের কাছে পরিষ্কার না! আমরা চাই বাংলাদেশের জনগন পতিত রাজনৈতিক নেতাদের ভুলে যাক, দেশের পরিস্থিতি বর্তমান সরকারের অধীনে এমন করেন যাতে কয়েকজন লোকের ভাগ্য নয়, সব গরীব-দুঃখীদের পেটে ভাত আসে, ৩০/৪০ টাকা মোটা চাল, আলু ২০/৩০ টাকায় নেমে আসুক। জনগন রাজনীতির থোড়াই কেয়ার করে তারা চায় পেটে পাত সন্তানের শিক্ষা, চাকুরী, জীবনের নিশ্চয়তা, কেউ সংখ্যা লঘু নয়, কেউ সংখ্যা গুরু নয়, কেউ বেহেশতের সনদ না দিক, এই একটা সনদ আল্লাহর হাতে থাকুক।
আফ্রিকার দেশগুলো অধিকাংশ ফ্রান্স কলোনি এখন ও! আমরা ভারত কেন, কারো কলোনি হতে চাই না দয়া করে সে নিশ্চিত পরিবেশ করুন! জুলাই বিপ্লবের মাঝে ফাঁকা গ্যাপ না থাকে! সিরিয়া এখন ইসরায়েল মার্কিন তত্বাবধানে, আক্রান্ত হচ্ছে লেবানন! এসব আন্তর্জাতিক মুসলিম ভাইদের দিকে তাকান! আফ্রিকার নতুন নেতার মত হয়ে আসেন কোন চেগুয়েভার যিনি
ফ্রান্স কে আল্টিমেটাম দিয়েছেন সরে যেতে যত দ্রুত সম্ভব!
ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন নিজ দেশকে ভালোবাসেন।