
স্টাফ রিপোটার:
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ) এর ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। শপথ গ্রহণ করান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ঠ সাংবাদিক, নজরুল গবেষক ও রাস্ট্রচিন্তক মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে কক্সবাজার জেলার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন মিয়া।
আরও শপথ নেন নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী সহ সভাপতি মো. আব্দুল মান্নান, মো. ফরহাদ হোসেন, এ.বি.এম. ফারুক হাসান, মো. ফিরোজ খান নুন, মো. তোজাম্মেল হক, মো. আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারষ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আব্বাস আলী সরকার, আ স ম মনোয়ারুজ্জামান, মো. জিয়াউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কারুজ্জামান সাহেব ফকির, মো. আতিকুর রহমান আতিক, মো. আলোমগীর, মোছা. শায়লা শারমিন মিম্মু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজা বেগম সহ সম্মানিত সদস্যবৃন্দ শপথ গ্রহন করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চলানায় ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলার,নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান (সাইন)।
শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন,‘চেয়ারম্যানদের সম্মানী সম্মানজনক হওয়া উচিত, যাতে জনপ্রতিনিধিরা আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে উৎসাহিত হয়। আমাদের সংবিধানে স্থানীয় শাসনের কথা বলা হলেও কোনো সরকার স্থানীয় শাসন, তথা স্থানীয় সরকারকে কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়নি। বরং কীভাবে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোকে ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ করে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই চালিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন,‘দেশ ও সমাজে কার্যকর স্থানীয় সরকার তৃণমূল থেকে গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। সাধারণ মানুষ সুশাসনের অংশীদার হয়। উন্নয়ন ও সেবা ব্যয় সাশ্রয়ী এবং গুণ ও মানসম্পন্ন হয়। স্থানীয় সরকার স্থানীয় জনসাধারণের জন্য গণতন্ত্রচর্চার প্রাথমিক ও মধ্যম স্তরের পাঠশালা। এখানে গণতন্ত্রচর্চা জাতীয় গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। সবকিছু মিলিয়ে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য রাষ্ট্র ও সরকারের উপব্যবস্থা হিসেবে স্থানীয় সরকারের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য।’
বিশেষ অতিথি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, বাংলাদেশকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। সবদিক থেকে তাদের শক্তি ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। স্থানীয় সরকারকে যে গণতান্ত্রিক করা দরকার, এই বিষয়ে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ এখনো দেখিনি। ঘর থেকে বের হলেই আমি সেবা পাবো, স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে আমি এটাই পেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাশকদের উপর আমলাদের নজরদারি সবসময় রয়েছে। ডিসি, ইউএনওরা সবসময় এদের ওপরে ছড়ি ঘুরাতে চায়। আমরা অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারেলেও আমলাতন্ত্র পরিবর্তন করতে পারিনি। বিভিন্ন দেশে দেখেছি স্থানীয় বরাদ্দ সেটা তৃণমূল পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেই টাকাটা তৃণমূল পর্যায়ে সঠিকভাবে পৌঁছায় না।
কিমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, গণতন্ত্রের সুফল পেতে হলে স্থানীয় সরকার কাঠামোয় অবশ্যই যুগোপযোগী সংস্কার আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলোর আলোকে একটি শক্তিশালী, কার্যকর ও অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনই হোক আমাদের অঙ্গীকার। স্থানীয় সরকার সংস্থাকে অবশ্যই স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে ও কাজ করতে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত সময়ে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর নির্বাচন হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে তাদের আর্থিক সামর্থ্যও বাড়াতে হবে। সবকিছু কেন্দ্রীয় সরকারের মুঠোয় রাখা ঠিক নয়। দেশবাসী সত্যিকার অর্থে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার দেখতে চায়।
উল্লেখ্য বিগত ২৯ নভেম্বর ২০২৫ রাজধানীর ৭৩ কাকরাইল ফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বি.ইউ.পি.এফ) এর যুগ্ম-আহ্বায়ক এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী এর সভাপতিত্বে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়।