মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন

পুতুলের ভবিষ্যৎ

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৩৪ Time View

কলমে: সুশান্ত কুমার দে

মিনুর পুতুল গুলো সারাদিন চুপচাপ থাকে, কোন কথা বার্তা বলে না। মিনু তবুও বক বক করে তাদের সাথে বকে যায়। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়,হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বয়।
দু’দিন স্কুল যাওয়া হয়নি, আজকে স্কুল কামাই করলে চলবে না।
প্রতিদিন খাবার দেওয়ার সময় বলে- আর ভাত নিবি,মাছ নিবি,এক টুকরো মাংস দেব?
পুতুলের বাবা, মা ছেলে,মেয়ে সবাই আছে,অথচ কেউ কোন কথা বলে না।
পুতুলের পরিবারের চার জনের মধ্যেও কোন আলাপ আলোচনা হয় না।
মিনু তাদের সবাইকে খেতে দেয়,মুখ বুঁজে খেয়ে দেয়ে উঠে যায়।
রাতে তাদের শোবার জন্য বিছানা পত্তর গুছিয়ে দেয়। তারা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে, সকাল দশটা বাজলে ও ঘুম থেকে উঠতে চায় না। পুতুল গুলো যেন ভীষণ আলসে হয়ে গেছে।
মিনু ও তার খেলার সাথী তনু -পুতুলদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে দেয়।
পুতুলদের স্নান করাতে পুকুর ঘাটে নিয়ে যায়।
স্নান সেরে তাদের পরনের কাপড় চোপড় ও পাল্টে দেয়।
সারাদিন পুতুলগুলোর শুয়ে বসে বেশ আরাম আয়েশে দিন কাটে।
তবে এদের ভবিষ্যত কি, সারা জীবন কি এভাবেই বসে বসে খাওয়াতে হবে?
তাছাড়া মিনু ও তনুর বিয়ে হয়ে গেলে তারা দু’জনেই তো শ্বশুর বাড়ি চলে যাবে।
তখনই ওদের কে দেখবে?
মিনু ও তনু ইতিমধ্যেই মামার বাড়ি বেড়াতে যাবে।
বার্ষিক পরীক্ষার শেষে প্রতিবছরই তারা মামার বাড়ি বেড়াতে যায়।
পুতুল গুলোকে তারা দু’জনে ভাগাভাগি করে মামার বাড়ি নিয়ে যাবে।
মিনু পুতুলের বাবা, মাকে নিয়ে যায়, আর তনু পুতুলদের দুই ভাই বোন কে নিয়ে যায়।
তারা মামার বাড়ি প্রায় এক সপ্তাহের মতো থাকবে।
মামার বাড়ি যাওয়ার আগে মিনু ও তনু পুতুলদের বারবার জিজ্ঞেস করে, এবার তোরা যদি কথা না বলিস, তবে তোদের মামার বাড়িতে রেখে আসবো।
মামীর কাজকর্ম করতে হবে, তখন বুঝবি ঠেলা? আমরা না থাকলে মামী সারা দিন তোদের দিয়ে এটা সেটা করাবে, কষ্ট দেবে – তোরা কি এটাই চাস?
এতো বুঝানোর পরও যখন কাজ হলো না, তখন তারা দাদুর কাছে গিয়ে বিষয়টা খুলে বলল।
দাদু ও অবাক হয়ে বললেন, সত্যিই তো পুতুল গুলো দিব্যি খাবে দাবে ঘুমাবে, অথচ কোন নড়াচড়া করবে না।
কথা বলবে না, কাজ কর্ম, খেলা -ধুলা কিছুই করবে না; তাই কি হয়?
দাদু পরামর্শ দিলেন চারখানা কঞ্চি সমান করে কেটে আনতে। একজনের পিঠে এক একটা কঞ্চি ভাঙতে হবে। তাহলেই বাপ বাপ বলে কথা বলবে।
মিনু ও তনু লাফিয়ে বলে উঠলো, না না দাদু, তুমি এসব কি বলছো?
ওদের মারলে ওরা তো ভীষণ ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করবে। আমাদের তখন কত কষ্ট হবে, তুমি তা কি জানো?
তোমার পরামর্শ টা আমাদের ভালো লাগলো না, দাদু!
আমরা একবার মায়ের কাছেই যাই,দেখি মা কি পরামর্শ দেয়!
মিনু ও তনু দুজনে মায়ের কাছে গিয়ে সবকিছু খুলে বলল। মিনুর মা, ও একই কথা বললেন।
পুতুল গুলোকে শক্ত লাঠি দিয়ে পেটাতে হবে। তাহলে অলসতা দূর হবে, কথা বলবে, কাজকর্মের প্রতি মনোযোগী হবে।
মিনু আর তনু তো ভেবেই অস্থির, মা ও একই কথা বলল?
আদরের পুতুল গুলোকে শেষ পর্যন্ত লাঠি পেটা করতে হবে?
আমরা তা কখনোই পারবো না।
দু’জনে মিলে কোন উপায় খুঁজে পেল না।
শেষমেশ মিনু ও তনু তারা দুজন মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিল।
পুতুলদের কাছে গিয়ে আবারও বুঝিয়ে বলবে, তাও যদি না শোনে তবে ভয় ভীতি দেখিয়ে কথা বলাতে হবে।
এর থেকে আর কোন বিকল্প পথ খুঁজে পেল না।
মারধর করা যাবে না, মারলে ওরা তো ভীষণ কান্না কাটি করবে।
ওদের আর কে দেখবে, আমি আর তনু ছাড়া ওদের দেখার কেহই তো নেই?
মিনু ও তনু দু’জনে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করবার জন্য পুতুলদের কাছে চলে যায়।
এতক্ষণ ধরে পুতুলরা সবার কথা গুলো শুনছিল।
তারা ভীষণ ক্ষোভে মিনুদের বাড়ি ছেড়ে চলেও গেল।
মিনু ও তনু পুতুলদের ঘরে ঢুকতেই দেখতে পেল, পুতুলদের ঘরের দরজা খোলা।
অথচ তাদের ঘুম পাড়িয়ে দরজা বন্ধ করে মিনু ও তনু বাইরে গিয়েছিল।
পুতুলের বাবা, মা,ভাই, বোন সবাই তো ঘুমাচ্ছিল! এখন কাউকে তো ঘরের ভেতর দেখা যাচ্ছে না।
তারা কথা বলতো না,এক পা হাঁটতে পারতো না, তাহলে ওরা কোথায় গেল?
মিনু ও তনু পুতুলদের এক এক জনের নাম ধরে জোরে জোরে ডাকতে লাগলো।
ওরে, হাদা, রাধা,গোপী,মদন তোরা সবাই কোথায় গেলি?
যেখানে থাকিস তাড়াতাড়ি চলে আয়?
তোরা বুঝি এতক্ষণে আমাদের কথা গুলো শুনছিলি?
তোরা বল,দাদুর কথায়, মায়ের কথায় আমরা কি তোদের মারতে ধরতে পারি?
তোরা জানিস নে, মিনু ও তনু তোদের কত ভালোবাসে?
তোরা যেখানে থাকিস, তাড়াতাড়ি চলে আয়?
তোদের কে দেখবে, তোরা তো না খেয়ে মরে যাবি?
তোরা আর রাগ করিস নে, ফিরে আয়, ফিরে আয়?
মিনু ও তনু দু’জন ভীষণ কান্নাকাটি শুরু করলো। চারিদিকে সবাই ছুটোছুটি করে পুতুলদের খুঁজতে বের হলো। কোথাও কেউ কোন সন্ধান দিতে পারলো না। তাহলে কোথায় গেল তারা?
তনুদের বাড়ি, রিয়াদের বাড়ি, পঁচাদের বাড়ি কোথাও পুতুলগুলো খুঁজে পাওয়া গেল না।
তনু ও মিনুর কান্নার শব্দে পাড়ার সবাই ছুটে এলো। ব্যাপার খানা খুবই হৃদয়বিদারক দৃশ্য!
মিনু ও তনুর কান্না দেখে অনেকের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল!

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102