শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৩ অপরাহ্ন

কবিতাঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নারী!

Coder Boss
  • Update Time : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
  • ৮৫ Time View

লেখকঃ দেবিকা রানী হালদার।

২৫ শে মার্চ শুরু হলো অপারেশন সার্চলাইট! ট্যাংক মেশিন গান, মর্টার, চায়নিজ রাইফেলস নিয়ে আক্রমণ করলো রাজারবাগ পিলখানা পুরানো টাউন বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলো! রোকেয়া হলে বাস করে আসছি গত তিন বছর! ২৫ মার্চের তান্ডব হত্যা অগ্নিসংযোগ ধর্ষণ চলছে প্রতিরোধ বিহীন! রোকেয়া হল থেকে আমাদের তুলে নিয়ে গেলো ৫/৭ জনকে! পালিয়ে ছিলাম জীবন ভয়ে খাটের নিচে! হিন্দু মেয়েদের বেছে বেছে লাইনে দাড় করালো, সুন্দরী দেখে ৫/৭ জন তুলে নিলো জীব গাড়ীতে! শুরু হলো পাশবিক নির্যাতনের রাত!

বান্ধবীরা কে কোথায় হাত বদল হয়ে বিছিন্ন হলাম তা আর জানতে পারলাম না! মেজর থেকে ক্যাপটেইন লেফটেন্যান্ট এমনি নিন্ম দিকে হাত বদল হতেই থাকলাম! পুরা নয় মাস খাবলে খেলো পাঞ্জাবি বেলুচ পাকিস্তানের ইসলামের সেনারা! জোর করে মদ পান করাতো, বস্ত্র বিহীন রাখতো যখন যেমন ইচ্ছে! এত অঢেল খাবার তারা জোগাড় করতো বাঙালির গরু-ছাগল মহিষ কেড়ে এনে! রাজাকাররা খাদ্য সরবরাহ করতো সেনা ক্যাম্পে! বেঁচে থাকার জন্য খেতাম গোগ্রাসে! ভাবতাম এত অত্যাচার জীবন নাশ নারীর ইজ্জত লুন্ঠন সোনা-দানা দস্যুতা ঈশ্বর সহ্য করবেন না! অনেকটা নবাব সিরাজুদ্দৌলার গোয়েন্দা “আলেয়ার” মত হয়ে গেলাম! বিশ্বস্ত হয়ে গেলাম একজন সেনা অফিসারের! সে বলতো, মনে হয় বহুতদিন মেরা রেজেক নাহি হায় এ মুল্লুক মে! বুঝতাম মুক্তি যোদ্ধারা জয়লাভ করতেছে!

এমনি ভাবে একসময় রোকেয়া হলের “অয়ন্তি দাস” পৌঁছে গেলাম লালমনিরহাট! টিন শেডের ঘর কেঁপে উঠলো এয়ার থেকে ফেলা বম্বিংয়ে! ভয় পেলাম না, ক্যাপটেইন আমাকে নিয়ে নামলো বাংকারে। কেঁপে উঠলো মাটি যেন ভুমিকম্প। প্রায় চারদিন না খেয়ে জ্ঞান হারালাম। কখন পালিয়ে গেছে সোনা মনু যাদু বলা সেই পাক সেনা অফিসার! নিজেকে আবিষ্কার করলাম ভারতীয় হাসপাতালে! সুস্থ হয়ে ফিরে এলাম স্বাধীন বাংলাদেশে! পেলাম না মা-বাবা বাড়ীঘর! পিতা হলেন “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব” ঠিকানা হলো “৩২ নাম্বার ধানমন্ডি” ! কিন্ত তুমি জগন্নাথ হলে বসবাস করা আমার সেই ঘর বাঁধার স্বপ্নের মানুষ টা আমার হলে না!
তোমায় খুঁজে পেলাম, ভরসা ছিলো আমার ভালোবাসার, আমি নারী অচ্ছুৎ হয়ে গেছি, আমায় তুমি ঘরে নিলে না, হলো না ঘর বাঁধা!

আমার রূপ-যৌবন সৌন্দর্য আমাকে পাকসেনার নজরে ফেলেছিল, আমার সৌন্দর্য আমাকে নয় মাস বাচায় রেখেছিলো, ওরা হত্যা করে নাই! আমি ও তোমার জন্য বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম!
ওরা হত্যা করে নাই, কত নারী কয়েক মাস ভোগ্য শেষে বুলেট বিদ্ধ হয়ে মরেছে, আমাকে মারে নাই, তুমি আমাকে হত্যা করলে! দেশ স্বাধীন হলো আমি ঘর-সংসার পেয়ে স্বাধীন জীবন পেলাম না! আবার ফিরে গেলাম ফিরে আসা ওপার বাংলায়! কেন বেঁচে থাকলাম, নারী অচ্ছুৎ হলে আর কেউ ভালোবাসে না তা গত নয়মাসে একবার ও মনে আসে নাই!

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

সরিষাবাড়িতে তুখোড় ছাত্রদল সেক্রেটারি সহঃঅধ্যাপক রুকন আর নেই মতিউর রহমান,সরিষাবাড়িঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সদস্য সচীব ও সরিষাবাড়ি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক সহঃ অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম রুকন গত রাত ২:৩০ ঘটিকায় উত্তরা হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেছেন।ইন্নাহ,,,,,রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। মহাদান ইউনিয়নে জন্মগত নাগরিক ও স্থায়ী বসতি শিমলা টাউন। মরহুম রিয়াজ উদ্দিন ডাক্তারের ২য় সন্তান মাজহারুল ইসলাম রুকন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ভাই ২ বোন ও স্ত্রী- সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহি রেখে গেছেন। ৭ ডিসেম্বর বাদ আছর সরিষাবাড়ি আরডিএম মডেল পাইলট হাই স্কুল মাঠে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের জানাযা নামাযে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম,সরিষাবাড়ি কলেজের সহঃ অধ্যাপক খায়রুল আলম শ্যামল,আমিমূল এহসান শাহীন,পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র ফয়জুল কবির তালুকদার শাহিন,সাধারণ হসম্পাদক জহুরুল ইসলাম পিন্টুসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অধ্যাপক /শিক্ষকবৃন্দ/ কর্মচারীবৃন্দ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অসংখ্য গুনগ্রাহি উপস্থিত থেকে বিদহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102